বগুড়ার ধুনটে জুয়া খেলা নিয়ে বিরোধের জেরে আরিফুল ইসলাম হিটলু (৩৮) নামের এক সন্ত্রাসীকে কুপিয়ে হত্যা করে গ্রামবাসী। এরপর তার মরদেহ গুম করেতে রাতেই এক কবরস্থানে পুঁতে রাখা হয়। রাতভর তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ সেই লাশ উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে কবরস্থানে পুঁতে রাখা সেই লাশে সন্ধান মেলে। সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত হিটলু ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের বেড়েরবাড়ি গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। তার নামে ধুনট থানায় ৮টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে সে ধুনট ও শাজাহানপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় জুয়ার আসর চালাচ্ছিলো। সেই জুয়ার আসর নিয়ে বিরোধে শনিবার রাত ১০টার দিকে গ্রামবাসী তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
এলাকাবাসী জানায়, ধুনট উপজেলার বেড়েরবাড়ি গ্রামটি শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়ন লাগোয়া। আমরুল ইউনিয়নের নাগরকান্দি খালের ওপরে নির্মিত ব্রীজের কাছে প্রায় একমাস যাবৎ জুয়ার আসর চালিয়ে আসছিল হিটলু। জুয়া খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বেড়েরবাড়ি গ্রামের মালেক নামের এক যুবককে কুপিয়ে আহত করে হিটলু। এখবর গ্রামের পৌঁছলে গ্রামের শতাধিক লোকজন জুয়ার আসরে হামলা চালিয়ে হিটলুকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর বেড়েরবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে তাকে। সেখান থেকে মরদেহ অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় গ্রামবাসী। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ধুনট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহের সন্ধান শুরু করে। রাতভর সন্ধান চালালেও মরদেহের কোন সন্ধান করতে ব্যর্থ হয় তারা। শেষে রবিবার বেলা ১১টার দিকে গ্রামের পাশর্^বর্তী মাঠের মাঝে অবস্থিত এক কবরস্থানে পুঁতে রাখা তার লাশের সন্ধান মেলে। পরে সেখান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, হিটলুর অত্যাচারে গ্রামবাসী অতিষ্ট ছিলো। তার নামে ধুনট থানায় মাদক, পুলিশের উপর হামলা, জুয়া খেলাসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৮টি মামলা রয়েছে। মাস তিনেক আগে হিটলু জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় ফেরে। এরপর আবারো শাজাহানপুর থানা এলাকায় জুয়া চালানোসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ে।
ওসি আরো বলেন, হিটলুর পরিবার রাতেই পুলিশকে নিশ্চিত করে যে হিটলু বেঁচে নেই। ঘটনাস্থলে রক্ত পড়ে থাকা দেখেও মনে হয় যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিন্তু রাতে তার লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। শেষে রবিবার বেলা ১১টার দিকে লাশটি এক কবরস্থানে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নিহতের পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে দাফন শেষে তারা এবিষয়ে মামলা দায়ের করবে।