ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাঁশখালীতে কৃষকের বসতভিটা ৫ বছর ধরে জবর দখল করে রেখেছে সন্ত্রাসীরা

শফকত হোসাইন চাটগামী, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:০৫:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন
কৃষক ছুপি আলমের দখলকরা বসতবাড়ি ও দখলকারী আজিজুল হক। উপরে ইনসেটে কৃষক ছুপি আলম।

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের রত্নপুর গ্রামে ছুপি আলম নামে এক দরিদ্র কৃষক বিএনপি কর্মীর বসতভিটা ৫ বছর ধরে জবর দখল করে রেখেছে আওয়ামী লীগ যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। সাবেক এমপি মোস্তাফিজের দুর্ধর্ষ ক্যাডার যু্বলীগ নেতা সেলিমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল হক ও তার ভাই আমিনুল হক নিরীহ ছুপি আলমের বসতভিটা ঘরবাড়ি ৫ বছর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারীতে জবর দখল করে নেন। সেই থেকে ছুপি আলম স্ত্রী সন্তান পরিবার পরিজন নিয়ে পথে পথে ঘুরছে। জবর দখলকারী আজিজ বাহারছড়া রত্নপুর গ্রামে অনুমোদন বিহীন ইটভাটা গাজী ব্রিকস এর মালিক। নির্যাতনের শিকার ছুপি আলম বাহারছড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি ও নিবেদিত প্রাণ কর্মী।
ছুপি আলম অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসীরা তার বসতভিটাই শুধু দখল করেননি তার ভিটার মাটি খুড়ে ইটভাটায় ব্যবহার করেছে। তাকে নির্যাতন, হামলা ও মারধর করেছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশ ছাড়া করেছে। তাছাড়া দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের জুলুম নির্যাতনের শিকার ছুপি আলম এখন তার বসতভিটা ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল হক ও তার লালিত সন্ত্রাসীদের বিচার দাবী করেছেন। বসতঘর ও ভিটামাটি ফেরৎ পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের রত্নপুর গ্রামের মৃত বাচা মিয়ার পুত্র ছুপি আলম তার পৈত্রিক ১৫ শতক জায়গার উপর ২০১৪ সাল থেকে বসতভিটা নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। পাশে আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল হক ও তার ভাই গাজী ব্রিক নাম অনুমোদনহীন ইটভাটা চালু করেন। অনুমোদন না থাকায় প্রশাসন একাধিক বার ওই ইটভাটা সীলগালা ও বন্ধ করে দিলেও সাবেক এমপি মোস্তাফিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিবারই ইটভাটাটি চালু করেন। এর মধ্যে বিগত ২০১৯ সালের জানুয়ারী মাসে বিএনপি কর্মী দরিদ্র কৃষক ছুপি আলমের বসতভিটা ও ঘরবাড়ি দখল করে নেন আজিজুল হক ও তার ক্যাডাররা। সে সময় ছুপি আলমের স্ত্রী সন্তানদের পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ওই ঘরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় বানান আজিজুল হক। এর পর থেকে বসতভিটা ফিরে পেতে বিভিন্ন জায়গায় ধর্না দিলেও কাজ হয়নি। এমনকি দরিদ্র এই কৃষককে হামলা মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করেন আজিজ ও তার ক্যাডাররা। ভ্যান গাড়ি চালিয়ে, কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা দরিদ্র ছুপি আলম জেল জুলুমেরও শিকার হন।
বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও এখনো কৃষক ছুপি আলমের বসতভিটা ও ঘরবাড়ি জবর দখল করে রেখেছে আওয়ামী লীগ যুবলীগের সন্ত্রাসী চক্র।

এই বিষয়ে আজিজুল হকের ভাই আমিনুল হক জানান, জায়গাটি খাস জায়গা। আমার ভাই হাফেজ ইরফান হত্যার পর ছুপি আলমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। মালামাল তার স্ত্রী সন্তানরা নিয়ে যায়। তবুও অন্য জায়গায় আমরা ঘর এবং ভিটা করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু সে না মেনে আমাদের আওয়ামী লীগ অপবাদ দিয়ে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করছে। ইটভাটার অনুমোদন না থাকা প্রসঙ্গে আমিনুল হক বলেন, আমাদের পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া অন্যসব কাগজপত্র আছে। তবুও পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র না দিয়ে আমাদের হয়রানি করেছে। আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিংয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে আমিনুল হক বলেন, ইটভাটার অনুমতি পেতে আমরা বাধ্য হয়ে মিছিল মিটিংয়ে যোগদান করলেও আমরা পারিবারিকভাবে জামাত করি। আওয়ামী লীগের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার জানান, এই বিষয়ে এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।