ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সরকার পরিবর্তনের পর দখল জোরদার

বাঁশখালীতে মামলা ও নিষেধাজ্ঞার পরও রাতের আঁধারে ঘর নির্মাণ

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ৩ অক্টোবর ২০২৪ ১১:০০:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ি ৩নং ওয়ার্ড এলাকায় বিরোধীয় জায়গার বিষয়ে আদালতে মামলা ও নিষেধাজ্ঞার পর গোপনে রাতের আঁধারে ওই বিরোধপূর্ণ জায়গায় স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশ ও নিস্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে এমন কর্মকান্ড ঘটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাদি বিধবা মর্জিয়া বেগম। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় প্রশাসন বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাতারাতি ঘর তৈরি করে দখল বাজির ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সরকার পরিবর্তনের পর জোরদার করা হয়েছে দখলবাজি।

 

পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালীর বৈলছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড এলাকার মৃত নুর আহমদের স্ত্রী মর্জিয়া বেগমের মালিকানাধীন বিএস ৯৯০ নং খতিয়ানের ১২৩০ নং দাগের ২০ শতক জায়গা একই এলাকার মৃত দুদু মিয়ার পুত্র মো: লোকমান ও তার লোকজন জবর দখল করার পায়তারা করে। লোকমান ও তার লোকজন উক্ত জায়গায় একাধিকবার ঘর নির্মাণের চেষ্টা করলে বাদি মর্জিনা ও এলাকাবাসী বাঁধা দেন। এনিয়ে একাধিকবার সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বাদিকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন লোকমান ও তার লোকজন। পরবর্তিতে ২০২৩ সালের ২৪ মে মালিক লুৎফুর রহমান, মফিজুর রহমান ও সাজমা খাতুনের পক্ষে তাদের ওয়ারিশ বিধবা মর্জিয়া বেগম চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা হাকিমের আদালতে মামলা দায়ের করেন। একই সাথে বাঁশখালী থানায়ও একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ গত ২২ আগস্ট আদালতে একটি তদন্ত প্রতিবেদনও দাখিল করেন। চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা হাকিমের আদালত থেকে ওই জায়গায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নিষেধাজ্ঞাও দেয়া হয়। বিষয়টি বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেয়া হলেও ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা কালক্ষেপন করেন বলে অভিযোগ করেন বাদির জামাতা সৈয়দুল আলম। তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল খালেক পাটোয়ারী একাধিকবার বিষয়টি সমাধান করার উদ্যোগ নিয়েও অদৃশ্য কারণে বার বার সরে আসেন। ওদিকে এই সুযোগে প্রতিপক্ষরা দখলের পরিমান বাড়ান।

এতে করে দখলবাজির ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

 

সৈয়দুল আলম জানান, এক বছর আগে মামলা করা হলেও পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা একটি বারের জন্যও ঘটনাস্থলে যাননি। অফিসে বসে রিপোর্ট দেয়ার কথা বলে খরচের নামে টাকা নিলেও রিপোর্টও দেননি। ওদিকে প্রতিপক্ষ রাতের আঁধারে মামলা চলমান এবং স্থিতাবস্থা বজায় থাকা জায়গায় ঘর নির্মাণ করেই চলছে। আস্তে দখল সীমানা বাড়াচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই প্রতিপক্ষরা জায়গা জবর দখল ও ঘর নির্মাণ করছে।

 

সরকার পরিবর্তনের পর এই দখল প্রক্রিয়া আরো জোরদার হয়েছে বলে জানান বাদি মর্জিয়া বেগম। তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তনের সুযোগে পুলিশ ও প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তায় মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও আমার জায়গা দখল করে নেয়া হচ্ছে। ঘর নির্মাণ করছে। প্রাণনাশের ভয়ে আমি কিছুই করতে পারছিনা।

 

অভিযুক্ত মোঃ লোকমান বলেন, জায়গাটি আমার। জায়গাটি আমাদের খরিদা। আরএস মুলে আমরা জায়গা কিনেছি। বিএস আমাদের নামে না হওয়ায় আমরা বিএস সংশোধনী মামলা করেছি। মর্জিনা বেগম আদালতের মাধ্যমে জায়গা পেলে আপোষে ছেড়ে দেব।

 

তদন্ত কর্মকর্তা বাঁশখালী থানার এএসআই আবদুর রহিম জানান, আমি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ঘর নির্মাণের বিষয়ে আদালত ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় ব্যবস্থা নেবে।

 

বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, আমি বাঁশখালীতে সবে মাত্র যোগ দিয়েছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিরোধ মিমাংসার চেষ্টা করব।