এবার বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে হজযাত্রায় সর্বনিম্ন খরচ হবে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ৮২ হাজার ৮১৮ টাকা কম। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বিশেষ প্যাকেজে হজে যেতে খরচ হবে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা। যেখানে চলতি বছর বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছিল ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এদিকে ২ নভেম্বর সরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সরকারিভাবে আগামী বছর হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হবে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা।
ঘোষিত সাধারণ প্যাকেজ অনুযায়ী, আগামী বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজযাত্রীর গত বছরের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কম খরচ হবে।
সরকারি দুটি প্যাকেজের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বেসরকারি এজেন্সিগুলো আজ প্যাকেজ ঘোষণা করল। বেসরকারি এজেন্সিগুলোর নির্ধারিত খরচের বাইরে কোরবানি খরচ হজযাত্রীকে বহন করতে হবে এবং নিজ দায়িত্বেই কোরবানি সম্পন্ন করতে হবে।
হাব সভাপতি বলেন, ‘হজযাত্রীকে কোরবানি বাবদ আনুমানিক ৮০০ সৌদি রিয়াল সঙ্গে নিতে হবে এবং কোরবানি নিজ দায়িত্বে সম্পন্ন করতে হবে। হজযাত্রী সৌদি আরবে ৩০ থেকে ৪৮ দিন অবস্থান করতে পারবেন। এর মধ্যে মদিনায় অবস্থান করতে পারবেন পাঁচ থেকে আট দিন। পাসপোর্টের মেয়াদ থাকবে আগামী বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এবার ৬৫ বা এর বেশি বয়সীরাও হজে যেতে পারবেন। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মেনিনজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিষেধক টিকার সনদ লাগবে। এজেন্সিগুলো বিভিন্ন সুযোগ–সুবিধাসহ বিভিন্ন মানের ও নিজ নিজ প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।
একটি স্বতন্ত্র কারিগরি কমিটির মাধ্যমে হজের বিমান ভাড়া পুনর্নির্ধারণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে গত ৫ নভেম্বর আবেদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তসলিম বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রী হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। বিমান ভাড়া কমানো হলে হজ প্যাকেজের মূল্যও কমানো হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকায় নিশ্চিত করার জন্য সব হজ ফ্লাইট ডেডিকেটেড হতে হবে। কোনোভাবেই কোনো শিডিউল ফ্লাইটে হজযাত্রী পরিবহন করা যাবে না।’
বিশেষ হজ প্যাকেজের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো—প্যাকেজ আপগ্রেডেশন, অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে মক্কার হোটেলে দুই ও তিন সিটের রুম; মক্কায় হেরেম শরিফের চত্বর থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ মিটারের মধ্যে উন্নতমানের হোটেল; মদিনায় মারকাজিয়া এলাকায় আবাসন ব্যবস্থা; এক রুমে সর্বোচ্চ ৪ সিট থাকবে; মিনায় ‘এ’ ক্যাটাগরির তাঁবুতে আবাসন ও বুফে খাবারের ব্যবস্থা; মিনা–আরাফাহ ও মুজদালিফা–মিনায় যাতায়াতে প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য বাসে সিট নিশ্চিত করা।
আগামী বছর হজে যেতে আগামীকাল বুধবার (১৫ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে হজযাত্রী নিবন্ধন। নিবন্ধনের শেষ সময় ১০ ডিসেম্বর। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার এজেন্সির হজযাত্রীদের ২ লাখ ৫ হাজার টাকায় নিবন্ধন করতে হবে। হজ প্যাকেজের বাকি টাকা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৪ সাল) বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি এজেন্সির কোটা ১ লাখ ১৭ হাজার জন।