ঢাকা, মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বড়লেখায় রাজমিস্ত্রীর হত্যায় প্রধান আসামিসহ ৫ জন কারাগারে, ৭ দিনের রিমান্ড

মোঃ জালাল উদ্দিন, মৌলভীবাজার : | প্রকাশের সময় : সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০২:৩৩:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন
রাজমিস্ত্রীর হত্যায় প্রধান আসামিসহ ৫ জন গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীকে ফাঁসাতে দিনমজুর রিয়াজ উদ্দিনকে (২৫) নৃশংসভাবে খুন করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি সিরাজুল ইসলাম ওরফে ইমন গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এমন তথ্য দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ইমনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বড়লেখা থানা পুলিশ আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫ জনকে গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) মোঃ মাসুদ পারভেজ আদালতের মাধ্যমে মৌলভীবাজার কারাগারে পাঠিয়েছেন।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন- আজমিরীগঞ্জের সিরাজুল ইসলাম ওরফে ইমন (৩২), মোঃ আলমঙ্গীর মিয়া (২৮), মোঃ শাহ আলী (৪০), মোঃ আসাবুল (২১) ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নাসিরনগরের মোঃ হুমায়ুন (৩১)। তারা সকলে বড়লেখায় ভাঙ্গারি ব্যবসার সাথে যুক্ত।
এদিকে ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে দিনমজুরকে হত্যা করা হয়েছে না-কি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে; তার রহস্য উদঘাটনে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) মোঃ মাসুদ পারভেজ।
আলাপকালে বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইয়ারদৌস হাসান রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বলেন, ‘ঘটনার পরপরই প্রধান আসামি সিরাজুল ইসলাম ওরফে ইমন পালিয়ে ঢাকায় চলে যায়। র‌্যাবের সহযোগিতায় তাকে ঘটনার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে বড়লেখায় আনা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে ঘটনায় জড়িত আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। তবে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের দক্ষিণ দোহালিয়া গ্রামের মৃত ফরিদ আলীর ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (৩০) রাজমিস্ত্রীর কাজসহ দিনমজুরির কাজ করে স্ত্রী ও মাসহ জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভাঙ্গারির দোকানে বস্তা উঠানোর কাজ আছে বলে রতুলী বাজারের উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ি থেকে বের হন। রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুলাউড়া-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের মাধবছড়া ব্রিজের প্রায় ১৫০ গজ পশ্চিম দিকে ছড়ার তীরের কৃষিজমিতে স্থানীয় কৃষকেরা বুধবার সকালে অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে বড়লেখা থানার ওসি মোঃ ইয়াদৌস হাসান, সেকেন্ড অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান, স্থানীয় দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আজির উদ্দিন, প্যানেল চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলামসহ জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করেন। পরে খবর পেয়ে নিহতের মা খনাবি বেগম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা খনাবি বেগম। ঘটনার পরই বড়লেখা থানা পুলিশ ক্লুলেস ওই হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য তৎপরতা শুরু করে। হত্যাকান্ডের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে র‌্যাবের সহায়তায় ঢাকা থেকে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে ঘটনায় জড়িত আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।