ঢাকা, রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

যথাযোগ্য মর্যাদায় জবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

আবু হানিফ, জবি প্রতিনিধিঃ | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৩:১৮:০০ অপরাহ্ন | শিক্ষা
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ১৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারন । বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন পুলে সম্মানিত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস থেকে স্ব স্ব রুটে বাস ছেড়ে যায়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার স্কাউট, বিএনসিসি ও রেঞ্জার ইউনিটের জন্য ধুমকেতু বাস, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বড় দুটি বাস রায়ের বাজার বধ্যভূমির উদ্দেশ্যে সকাল ৬:৪৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যায়। 
 
রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ একে একে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিট ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। 
 
এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অধ্যাপক ডঃ মোঃ ইমদাদুল হক, উপাচার্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডঃ কামালউদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
 
উক্ত আলোচনা সভায় সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ ও ছাত্র-ছাত্রীরা বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বক্তব্য রাখেন। 
এ সময়ে উপাচার্য ডঃ মোঃ এমদাদুল হক বলেন- ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টুকুতেই পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করে। ১৯৭১ এর ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধ জয়ী সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এই পরিকল্পিত গণহত্যাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। বন্দী অবস্থায় বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়। অনেকের লাশ শনাক্তও করা যায়নি, পাওয়াও যায়নি বহু লাশ। ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর পালিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। 
 
সভাপতির বক্তব্যে  অধ্যাপক ডঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালী জাতিকে মেধাশূন্য করার এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই। আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে হলেও আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি।
 
শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হলেও একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যা শুরু হয় সে বছর মার্চে, ডিসেম্বরে তা তীব্র আকার ধারণ করে; নির্মম নৃশংসতায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়। দেশের জন্য একাত্তরের শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ কখনই বিস্মৃত হবার নয়।
 
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, স্কাউট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিট, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
 
পরিশেষে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।