ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রাঙ্গুনিয়ায় আগুনে পুড়েছে এক পরিবারের ৫ সদস্য

জাহেদ হাছান তালুকদার। | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ১৩ জানুয়ারী ২০২৩ ১২:৫১:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন
 
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিনে রান্নার ঘরের চুলা থেকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এক পরিবারের ৫ সদস্য মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গৃহকর্তা খোকন বসাক (৪২) অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। 
 
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারী) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মহাজন মহাজনপাড়া এলাকার বাসিন্দা খোকন বসাক'র বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ সময় গৃহকর্তা খোকন বসাক আগুনের লেলিহান শিখার মধ্যদিয়েও কোনো রকম বের হয়ে আসতে সক্ষম হলেও ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা তার বাবা কাঙ্গাল বসাক(৭০), মা ললীতা বসাক(৬০), স্ত্রী লাকী বসাক(৩২), ছেলে শৌরভ বসাক(১২), মেয়ে শয়ন্তী বসাক(৬) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। গুরুতর দগ্ধ গৃহকর্তা খোকন বসাককে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
 
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) ও রাঙ্গুনিয়া থানার ওসিসহ পুলিশ ফোর্স এবং ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। জন প্রতিনিধি ও স্থানীয় জনতাসহ সকলের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় বসত ঘরের জানালার গ্রিল কেটে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ৫ ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। অগ্নিকাণ্ডে খোকন বসাকের মালিকানাধীন সিএনজি অটো রিকশাটিও সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়।
 
স্থানীয়দের সূত্র হতে জানা গেছে , পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক খোকন বসাক বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সেমিপাকা (পাকা ওয়াল ও টিনশেড) ঘরে বসবাস করতেন। তিন কক্ষবিশিষ্ট ঘরটিতে একটি মাত্র দরজা ছিল । সেই দরজা কাছে ছিল তাদের রান্নাঘর। স্থানীয়দের ধারণা, রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুন লেগে সেখানে মজুদকৃত বিপুল পরিমাণ কাঠের লাকড়ির মাধ্যমে তা পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু ঘরে দরজা ছিল একটাই, আর সেটা ঘিরেই ছিল আগুনের মূল উৎসস্থল, তাই ভাগ্যগুণে গৃহকর্তা খোকন বসাক আহত অবস্থায় বের হতে পারলেও ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা ঘরের অন্য বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা বের হতে পারেননি। 
 
স্থানীয় সূত্র আরো জানায়, এখন থেকে আনুমানিক ১০ বছর পূর্বে একই বাড়িতে অনুরূপ আরেকটি অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল। সেই যাত্রা কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ভাগ্যদেবী প্রসন্ন ছিলেন না এবার। 
 
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মোঃ আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভেতরে আটকে পড়া দুই শিশুসহ পাঁচজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের চেষ্টা করি। কিন্তু তার আগেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হওয়ায় তাদের মৃতদেহই উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বসতঘর সংলগ্ন রান্নাঘরের চুলার আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে থাকতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। পুরো পরিবার আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।