আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) অধ্যাদেশের সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়ায় বিধান রাখা হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থাকলে ও আদালত মনে করলে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই সুপারিশ করা যাবে। খসড়াটি অনুমোদনের জন্য বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন উপলক্ষে সরকারের অর্জন ও লক্ষ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়। ‘আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে আইন মন্ত্রণালয়ের বিগত ১০০ দিনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
কিছু আইনগত সংস্কার কাজ করার কথা বলতে গিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩’- এ কিছু মারাত্মক বিচ্যুতির কথা দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন বলেছিল। সুশীল সমাজও বিভিন্ন সময় বলেছিল। সরকার যখন এটিকে সংস্কারের উদ্যোগ নিল তখন সরকার চেয়েছে বিচারটি যেন দেশীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য হয়। একই সঙ্গে এর মাধ্যমে যেন সুবিচার সুনিশ্চিত করা হয়। এ জন্য ব্যাপক পরামর্শ করা হয়েছে। একটি অসাধারণ সংশোধনী করার জন্য চেষ্টা হয়েছে; যেটি এর বিচারের গুরুত্ব, যৌক্তিকতা এবং গ্রহণযোগ্যতা অনেক বাড়িয়ে দেবে।
তিনি বলেন, আগামীকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সেই সংশোধনীর খসড়া তোলা হবে। উপদেষ্টা পরিষদ এটি গ্রহণ করলে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই এটি আইনে পরিণত হবে। তারপর প্রক্রিয়াগত কারণে যত দিন লাগে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) অধ্যাদেশের সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়ায় রাজনৈতিক দলের বিচারের ধারা যুক্ত হচ্ছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি দিন অপেক্ষা করেন, দেখবেন। সংশোধনী তো উপদেষ্টা পরিষদকে গ্রহণ করতে হবে।’
খসড়ায় কী আছে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, সেখানে আদালতকে সেভাবে সরাসরি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে আদালত যদি মনে করেন তাহলে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তারা সুপারিশ করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবে।
এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আরও বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কিছু কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিক দলের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমোদন রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে, নির্বাচন কমিশন আছে..., এগুলোর কথা খসড়ায় উল্লেখ করা নেই। কিন্তু যদি মনে করে তাহলে করতে পারে। এটা এমনটা যে আদালত শাস্তি দেবেই। আদালত যদি মনে করে শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করবে শুধু। এটা খসড়ায় রাখা হয়েছে। তবে এটি উপদেষ্টা পরিষদের ওপর নির্ভর করে, পরিষদ এটি রাখবে কি না বা কি ফর্মে রাখবে।
বায়ান্ন/এসবি