ঢাকা, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

রায়পুরে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় খুঁড়িয়ে চলছে বিটিসিএল

মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ, রায়পুর: | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ৫ এপ্রিল ২০২২ ০৪:২০:০০ পূর্বাহ্ন | জাতীয়
 
লোকবল সংকট, অব্যবস্থাপনা, কর্মকর্তাদের উদাসীনতা, দিনের পর দিন সংযোগ বিকল থাকাসহ বিভিন্ন কারণে লাভজনক প্রতিষ্ঠান লক্ষ্মীপুরের রায়পুর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ এখন চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। 
 
উপজেলা টেলিফোন এক্সচেঞ্জটির সংযোগ (লাইন) ধারণক্ষমতা ৫০০ হলেও এখন গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ১৬৩ জন। অপরদিকে প্রাচীর না থাকায় রাতেরবেলায় মাদক সেবনকারী ও বখাটেদের আড্ডায় পরিণত হয় এলাকাটি। এলাকাবাসী, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও টেলিফোন গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
 
 
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাস টার্মিনাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঝে অবস্থিত টেলিফোন এক্সচেঞ্জ কার্যালয়টির সামনে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। চারপাশে ঝোপঝাড়ের কারণে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। নেই কোনো সীমানা প্রাচীর। ঝুঁকিপূর্ণ, জরাজীর্ণ ও দরজা-জানালার অধিকাংশই ভাঙা। ভবনটিতে চারজন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। তাদের কোনো কাজ না থাকায় গল্প ও আড্ডায় সময় পার করতে হচ্ছে। এক্সচেঞ্জটির যথাযথ ব্যবহার না থাকায় সরকারও রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। 
 
আরও জানা যায়, ২০০৭ সালে রায়পুর অ্যানালগ পদ্ধতির টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি প্রায় ৫০০ সংযোগের ডিজিটাল এক্সচেঞ্জে রূপান্তরিত হওয়ার পর এটি প্রাথমিকভাবে ২০০  টেলিফোন সংযোগ দিয়ে চালু করা হয়। চালুর পর নতুন সংযোগ বাড়লেও গ্রাহকসেবাকে গুরুত্ব না দেওয়ায় দিন দিন তা কমতে থাকে। টেলিফোন বিভাগের সেবার মান নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করায় টেলিফোন ছাড়ার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।
 
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন কর্মচারী জানান, নিতান্ত বাধ্য হওয়া ছাড়া গ্রাহকরা আর রায়পুর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনে যেতে আগ্রহী নন। জনবল সংকটের কারণে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানের সেবার মান তলানিতে এসে ঠেকেছে। ফলে নতুন করে কাউকে টেলিফোন সংযোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না। বরং অনেক টেলিফোন গ্রাহক তার টেলিফোন সংযোগ বিটিসিএলের কাছে হস্তান্তর করছেন। 
 
রায়পুর পৌরসভার ব্যবসায়ী ও পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ জুটন বলেন, মোবাইল ফোনের বিভিন্ন সুবিধা থাকায় দিন দিন টেলিফোনের ব্যবহার কমে যাচ্ছে। প্রায় ১৫ বছর আগে স্বজনদের টেলিফোনের অপেক্ষায় মানুষ টেলিফোন অফিসে এসে লাইনে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। আগে আমাদের বাসায়ও লাইন ছিলো। সমস্যা হলে লাইনম্যানকে ডাকলেও তারা সময়মত আসে না। তারা বলেন, লোকবল সংকটের কারণে আসতে পারছি না- দেরি হবে বলে ফোন কেটে দেন।'
 
রায়পুর টেলিফোন এক্সচেঞ্জের জুনিয়র ব্যবস্থাপক একেএম আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সরকারি অফিসিয়াল কর্মকর্তারাই টেলিফোনের গ্রাহক। ‘অপারেটর, লাইনম্যানসহ বিভিন্ন পদে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় দৈনিক ভিত্তিতে লোক নিয়ে আমাকে লক্ষ্মীপুর কার্যালয় থেকে রায়পুর কার্যালয়ে মাঝে মাঝে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে হচ্ছে।’ আগে মাদকসেবীদের অনেক আড্ডা ছিল। এখন অনেক কমে গেছে। ২০০৮ সালে কোম্পানি রূপান্তরিত হওয়ায় এ সমস্যা বেশি দেখা দিয়েছে।