কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশী হামলা এবং সকল সরকারী চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে প্রতিবাদী মশাল মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশ থেকে একটি প্রতিবাদী মশাল মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এসে শেষ হয়।
এসময় ‘সারাবাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বলেনবাংলায়, কোটা প্রথার ঠাঁই নাই’, ‘আর না আর না, মেধাবীদের কান্না’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো অবিলম্বে সকল চাকরিতে সর্বোচ্চ ৫% কোটা রেখে আইন পাশ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, আমাদের বরাবরই কোটাবিরোধী বলে চিহ্নিত করা হলেও আমরা কোটার যৌক্তিক সংস্কার চাই। উপজাতিসহ অনগ্রসর সকলের জন্য কোটা রাখতে হবে তবে তা কোনোভাবেই ৫% এর উপরে না। এছাড়াও গতকালকের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে যেসকল পুলিশ ও সরকারপন্থীরা অতি উৎসাহী হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে তাদের দ্রুত বিচার করতে হবে। আমাদের এই দুইটি দাবি আদায় না হলে সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম মেঘ , আজকের আমদের এই মশাল মিছিলে আজকে শুধু জাবির শিক্ষার্থীদের সাথে সাভার কলেজ, ধামরাই কলেজ, গণবিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যোগ দিয়েছে। আজকের মশাল মিছিল থেকে আমরা বলে দিতে চাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের গায়ে যেসকল পুলিশ হাত দিয়েছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি আমাদের একদফা দাবি ( সরকারি চাকরিতে সর্বোচ্চ ৫% কোটা) মেনে নিতে হবে। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশকে অচল করে দেয়া হবে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, গতকাল পুলিশ এবং সরকার মদদপুষ্ট শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমন করেছে তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমাদের এক দফা দাবির পাশাপাশি এখন এটাও আমাদের অন্যতম দাবি। দাবি মেনে নেওয়া না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি নেয়া হবে। পাশাপাশি হাইকোর্টের স্থিতিবস্থার রায়ের উপর আস্থা ও সম্মান রেখেই আমরা চাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তত কমিশন গঠন করে কোটা সংস্কারের কার্যক্রম শুরু করা।
উল্লেখ্য গতকাল ১১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ আক্রমন ও গুলি চালায়। এতে আহত হয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।