ঢাকা, সোমবার ৬ মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১

সিলেটে জাপা প্রার্থী বাবুলের ইশতেহার ঘোষণা

সিলেট ব্যুরো: | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৮ জুন ২০২৩ ১০:২৭:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন


সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।

 

রবিবার (১৮ জুন) বিকেল ৩টায় নগরীর কুমারপাড়াস্থ লাঙ্গল প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী, সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুল ২১ দফা ইশতেহার ঘোষণাকালে করেন।


নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, এই নির্বাচনে যারা ভোটার তাদের অনেকে আমার গুরুজন, অনেকে আমার ভাই-বন্ধু, অনেকে আমার সন্তানতুল্য। ভোটারদের একটি বড় অংশ তরুণ। এই তরুণ প্রজন্মই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের সঠিক চিন্তা-ভাবনা এবং উদ্ভাবনী চিন্তা আমাদের সমাজকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

আমার একটাই চাওয়া ভোটাররা যেন সচেতন থাকেন। যেখানে অনিয়ম, পেশিশক্তির প্রদর্শন, অনৈতিক চর্চা দেখতে পাবেন সেখানে প্রতিবাদ করবেন। নির্বাচন কমিশন যাতে নিরপেক্ষ থাকে, এক পক্ষের হয়ে কাজ না করে এবং সর্বোপরি সুষ্ঠু নির্বাচন করে সেদিকে তীক্ষ নজর রাখবেন। আমরা জানি আইন সবার জন্য সমান। কিন্তু এই বাস্তবতা কি আমরা দেখতে পাচ্ছি? সরকারদলীয় প্রার্থী প্রতিদিন যেভাবে নির্বাচনী আইনের লংঘন করছেন, অপতৎপরতা চালাচ্ছেন তাতে একজন প্রার্থী হিসেবে আমি শঙ্কিত। আমি বিশ্বাস করি আপনারাও এসব দেখছেন এবং যথাসময়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবেন।

 

একটি পরিকল্পিত নগরের ক্যানভাস অনেক বড়। শুধু রাস্তাঘাট আর ড্রেন করলেই নগরটি পরিকল্পিত হয়ে উঠে না। সিলেট নগরের এখনও অনেক সমস্যা রয়েছে। যানজট, জলাবদ্ধতা ছাড়াও অনেক কিছু করার বাকি রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে সিটি করপোরেশনের আয়তন অনেক বেড়েছে। ২৭টি ওয়ার্ড থেকে হয়েছে ৪২টি ওয়ার্ড। বর্ধিত এলাকায় অনেক সমস্যা রয়েছে। অনেক পিছিয়ে রয়েছে নতুন এলাকাগুলো। সুতরাং এই নগরকে যে বা যারা ভালোভাবে জানে, বুঝে তাঁর হাতেই নগর উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া উচিত। ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ কেউ এই নগরের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। যে নগরের অলিগলিই চেনে না তার পক্ষে নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ কতটুকু সম্ভব এই বিচারের ভার আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম।

 

আমি এই শহরেরই সন্তান। সুরমার এপার-ওপার দুপারই আমার চেনা। এই নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে আমার পদচারণা রয়েছে। তাই নগরবাসীর কাছে আমার আহ্বান আপনারা যেন সবকিছু বিবেচনায় রেখে লাঙ্গল মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেন। আমার বিশ্বাস নগরবাসী অতীতের মতো সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবেন না। আপনারা জানেন, নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করা হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিদিন লংঘন করা হচ্ছে। এমনকি নানা কূটকৌশলের ছক কষে সরকারদলীয় প্রার্থী জয়ী হতে চাইছেন। কিন্তু আমার বড় শক্তি আমার নগরবাসী ও ভোটারবৃন্দ। আপনারাই এর প্রতিবাদ করবেন আপনাদের শক্তিশালী রায়ের মাধ্যমে। সিলেটের মানুষ কোনোদিন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়নি। হুমকি-ধামকি পেশিশক্তিকে ভয় করেনি। যখনই সুযোগ পেয়েছে সব হিসাব কড়া-গন্ডায় মিলিয়ে দিয়েছে। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এবারও আপনারা সেই কাজটি করবেন যেটা আপনাদের বিবেকের কাছে সঠিক মনে হবে।

আমি কথা দিচ্ছি, আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করলে সিলেটকে একটি আধুনিক মহানগর হিসেবে গড়ে তুলব। নগরবাসীর নিরাপত্তা, যোগাযোগের উপযোগী নতুন নতুন রাস্তা, ফুটপাত নির্মাণসহ যানজট নিরসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেবো। যা সংক্ষিপ্ত আকারে আমি আমার এই ইশতেহারে তুলে ধরছি-


১. আমি নির্বাচিত হলে সিলেটকে একটি নাগরিকবান্ধব, শিল্পবান্ধব, যানজটমুক্ত, পরিবেশবান্ধব, জলাবদ্ধতামুক্ত, সুপরিকল্পিত আবাসনের নগর হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবো ।

২. সিলেট সিটি করপোরেশনকে সর্বজনিন এবং দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ। নগরের উন্নয়নে করপোরেশনের সঙ্গে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। নগর উন্নয়নে স্থায়ী কমিটিগুলোর সঙ্গে স্ব স্ব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ নাগরিকদের সম্পৃক্ত করা হবে। বর্তমান যে নগর ভবন রয়েছে এটিকে একটি বহুতল বাণিজ্যিক বা আবাসিক ভবন ছাড়া কিছুই মনে হয় না। ভনটিতে কোনো স্থাপত্য ঐতিহ্য নেই। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে নগর ভবনকে আধুনিক ও ঐতিহ্যের মিশেলে একটি দৃষ্টিনন্দন নগর ভবনে রূপান্তর করব।

৩. বর্তমানে ৪২টি ওয়ার্ড নিয়েই সিলেট নগর। তাই নগরের উন্নয়ন এবং সামগ্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে ওয়ার্ড থেকেই শুরু করতে হবে। নির্বাচিত হলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ডের বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন ও সন্ত্রাসবিরোধী নাগরিক কমিটি গঠন করা হবে। এলাকার উন্নয়ন ও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতে এই কমিটি কাজ করবে।

৪. নগরের সেবামূলক খাতগুলোকে আরও শক্তিশালী করা হবে। এজন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হবে। যদিও একজন মেয়র ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হন কিন্তু তাকে অন্তত সামনের ১০০ বছর মাথায় রেখে পরিকল্পনা নিতে হয়। যাতে নগরবাসী কাঙ্ক্ষিত সুফল পেতে পারেন। আমি সেটাই করতে চাই। সিলেট একটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতা বুদ্ধির পাশাপাশি ভবন নির্মাণের অনুমতি প্রদানে যথাযথভাবে তৈরি করা হচ্ছে কি-না সেট কঠোরভাবে নিশ্চিত করা হবে।

৫. সিলেট নগর এখন অনেক বড়। বিশেষ করে নতুন যে ওয়ার্ডগুলো হয়েছে সেগুলোতে অনেক সমস্যা। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। তাই প্রথমেই নতুন ১৫টি ওয়ার্ডের পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হবে। নগরীর বর্ধিত এলাকায় পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বিদ্যমান রাস্তাঘাটের সংস্কার ও নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

৬. সিলেট নগরের একটি বড় সমস্যা পানীয় জলের সমস্যা। এই সমস্যা এখন আরও প্রকট হবে কারণ আয়তন বেড়েছে। তাই এই সমস্যা সমাধানে একটি কার্যকর প্রকল্প নিতে হবে। এক বছর আগে বলা হয়েছিল সিলেট ওয়াসা গঠন করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোনো নাম-গন্ধই নেই। সুতরাং ওয়াসার আশায় বসে থাকলে হবে না। সিটি
করপোরেশনকেই সমস্যা সমাধান করতে হবে। এবং এটা আমি অবশ্যই করব।

৭. সিলেট নগরের অরেকটি বড় সমস্যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। মহানগরে প্রতিদিন হাজার হাজার টন বর্জ্য জমছে। কিন্তু এগুলো অপসারণের সক্ষমতা নেই সিটি করপোরেশনের। আমি নির্বাচিত হলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় একটি প্রকল্প হাতে নেবো। বর্জ্য রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট স্থাপন করে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করব। এছাড়া অপচনশীল পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যের জন্য আলাদা প্ল্যান্ট স্থাপন করে এগুলোকে রিসাইক্লিং করে গৃহস্থালী পণ্য তৈরির ব্যবস্থা করব। যা বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে। এটা বাড়িয়ে বলা নয়, এটা সম্ভব। আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন গত মাসে জাপানে জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি জ্যাকেট পরে গিয়েছিলেন যেটি ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি। সুতরাং সবই সম্ভব—শুধু প্রয়োজন উদ্যোগ।

৮. সিলেট নগরের আরেকটি বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা। নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে বিদ্যমান ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারসহ নতুন ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ করা হবে। নগরের খাল ও ছড়া পুনঃখননের ব্যবস্থা করা হবে। সুরমা নদী খননের ব্যাপারে সম্ভাব্যতা যাচাই করে সরকার যাতে সুরমা নদী খননের উদ্যোগ নেয় তার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করবে।

৯. সিলেট একটি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। সিলেট নগরেও অনেক প্রবাসী রয়েছেন। প্রবাসীরা আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধা। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীরা অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেন। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও তাদের অবদান অনস্বীকার্য। তাই নাগরিক সেবার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রবাসীরা যাতে অগ্রাধিকার পান সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের জন্য আলাদা সেল প্রতিষ্ঠা করা হবে।

১০. সিলেট নগর কোনোভাবেই শিশুবান্ধব নয়। নগরীতে শিশু পার্ক নেই বললেই চলে। ওসমানী শিশু পার্ক নামে একটির অস্থিত্ব থাকলেও সেটি বাণিজ্যিক এবং এর সুফল শিশুরা পাচ্ছে না। দক্ষিণ সুরমায় সম্প্রতি একটি চালু হলেও সেটিরও একই অবস্থা। তাই আমি নির্বাচিত হলে শিশু পার্ক নির্মাণসহ এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবো। একসময় সিলেট ছিল ছিল দিঘীর নগরী। এখন দিঘী নেই বললেই চলে। যেগুলো আছে সেগুলো সংস্কার করব। অবৈধ দখলে থাকলে সেগুলো উদ্ধার করব।

১১. সিটি করপোরেশনের কর ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনব। অযৌক্তিক হোল্ডিং ট্যাক্স পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।

১২. বর্তমান সময়ে কারিগরী শিক্ষার বিকল্প নেই। তাই সিটি করপোরেশনে উদ্যোগে একাধিক কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হবে। যেখানে গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষার অভাবে নগরে কিশোর গ্যাং বাড়ছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তাদের পুনর্বাসন এবং কারিগরী শিক্ষায় প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

১৩. সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে একটি আধুনিক পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হবে। একসময় সিলেট পৌর পাঠাগার ছিল। সেখানে অসংখ্য দুর্লভ গ্রন্থ ছিল। এখন এই পাঠাগারের অস্থিত্বই নেই। এটা চালু করা হবে। পাশাপাশি নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠাগার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া ব্যক্তি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগার সমূহকে সবধরণের সহায়তা দেওয়া হবে।

১৪. সিলেট নগরে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা অনেক। কিন্তু কর্মজীবী মায়েদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নেই। তাই তাদের সন্তানদের দেখাশুনার জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার চালু করা হবে। নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নারীদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া কর্মজীবী নারীদের স্বল্প খরচে থাকার সুবিধার্থে হোস্টেলের ব্যবস্থা করা হবে।

১৫. সিলেট নগরীকে আধ্যাত্মিক নগরী বলা হয়। এছাড়া সিলেট রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহরও। এই সম্প্রীতি সুরক্ষায় সিটি করপোরেশন দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবে। সিলেটের ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তা তুলে ধরার জন্য জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অভ্যন্তরে এ ধরণের একটি স্থাপনার কথা থাকলেও কার্যত তা করা হয়নি। এটা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

১৬. সিলেটের রয়েছে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। একই সঙ্গে পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল। সিলেটের সংস্কৃতির বিকাশে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে পৃষ্ঠপোষকতা দেবে করপোরেশন। একটি সুপরিকল্পিত সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তুলব। যেখানে নাট্যমঞ্চ, সিনেপ্লেক্সসহ সাংস্কৃতিক চর্চার সবধরণের সুবিধা থাকবে। পাশাপাশি পর্যটনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

১৭. সিলেটে খেলার মাঠ নেই। দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে ক্রীড়াঙ্গণ। আপনারা জানেন আমি সবসময় ক্রীড়াক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছি। নির্বাচিত হলে করপোরেশনের উদ্যোগে খেলার মাঠ তৈরি এবং ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে খেলাধুলার প্রসার ঘটাতে ব্যবস্থা নেবো। বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে নগরকে সবুজে আচ্ছাদিত করা হবে।

১৮. সিলেটে নিম্নবিত্ত ও বস্তিবাসীর সংখ্যা অনেক। এদের অধিকাংশই শ্রমিক। এছাড়া চায়ের দেশখ্যাত সিলেটে চা-শ্রমিকের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু এসব শ্রমিকরা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। আমি নির্বাচিত হলে শ্রমিকদের সুচিকিৎসার জন্য সিটি করপোরেশনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। সেখানে নামমাত্র মূল্যে শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।

১৯. সিলেট এখন বিভাগীয় শহর। এখানে কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা যেমন বেশি তেমনি গ্রাম থেকে শহরে আসা মানুষের চাপও বাড়ছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতের উদ্যোগ নেওয়া হবে। হাউজিং এস্টেট এবং শাহজালাল উপশহর ছাড়া দীর্ঘদিন কোনো আবাসন প্রকল্প নেওয়া হয়নি। এটা এখন সময়ের দাবি। সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে এ ধরণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। বস্তিগুলোকেও উন্নত সুযোগ-সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

২০. সিলেট নগরীকে একটি ডিজিটাল নগরী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। তরুণদের জন্য আইটি ক্ষেত্রে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। যাতে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থান হয়।

২১. সিলেট সিটি করপোরেশনকে সত্যিকার অর্থে একটি সেবামূলক ও জনকল্যাণমুখী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করাব। করপোরেশনে সবার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচিত হলে ১০০ দিনের একটি কর্মসূচি হাতে নেবো এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নগর উন্নয়নে সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এসময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্ঠা আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা শাখার সভাপতি সাইফুদ্দিন খালেদ, সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আব্দুস শহিদ লস্কর বশির সহ জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।