সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে নদ-নদীতে আবারও উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামায় নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার(১৫ এপ্রিল) ও শনিবার(১৬ এপ্রিল) রাতে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ২৪ ঘণ্টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলার নদ-নদীর পানি বেড়েছে ৫০ সেন্টিমিটার। একই সাথে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসল রক্ষা বাঁধগুলি হুমকির মুখে রয়েছে। এতে ফসলহানীর শঙ্কায় রয়েছেন হাওরের কৃষক।
সরেজমিনে দেখা যায় শনিবার(১৬ এপ্রিল) শান্তিগঞ্জ উপজেলার খাই হাওর, দেখার হাওর সহ বিভিন্ন হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ হুমকির মধ্যে রয়েছে। ইতিমধ্যে শান্তিগঞ্জ উপজেলার সুরমা, মহাসিং, নাইন্দা নদী, কালনী নদী, লাউগাঙ্গ সহ বিভিন্ন নদ নদীতে গত ২৪ ঘন্টায় বেড়েছে ৫০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারি প্রকৌশলী মাহবুব আলম। এতে কৃষকের পাকা ও আধাপাকা ধান নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। কোনো কোনো হাওরে আতঙ্কে আধা পাকা ধানই কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। একই সঙ্গে বৃষ্টি ও নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধগুলি সংস্কার করাও কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মোট ২২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। তার মধ্য হাইব্রিড ৮ হাজার ৪২৫ হেক্টর, উফসি ১৩ হাজার ৬১০ হেক্টর এবং স্থানীয় ১ শত ৬৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। এ তথ্য শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের।
শান্তিগঞ্জের জয়কলস-আহসানমারা ফসল রক্ষা বাঁধের পিসআইসি কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য মছকু মিয়া জানান, গত শুক্রবার ও শনিবার রাতে কালবৈশাখী ঝড় ও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে আমার বাঁধ এলাকায় নাইন্দা নদীর পানি প্রায় এক হাতের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আমিও আতঙ্কের মধ্যে আছি। প্রশাসন সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বাঁধের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। নিয়মিত ভাবে আমি ফসল রক্ষা বাঁধের সংস্কার কাজ করছি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারি প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলার খাই হাওরস্থ লাউগাঙ্গ নদী ও কালনী নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটারের উপরে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশপাশি অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অধিক ঝুঁকিতে কাউয়াজুরী হাওরের ৪১নং বাঁধ, দেখার হাওরের ৫৩ নং জয়কলস-আহসানমারা ফসল রক্ষা বাঁধ রয়েছে। ফসল রক্ষা বাঁধ রক্ষায় নিয়মিত ভাবে সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান বলেন, গত রাত(শুক্রবার) কালবৈশাখী ঝড় শেষে রাত আড়াইটায় ঝুঁকিপূর্ণ আহসানমারা ও জয়কলস ফসল রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেছি। পাহাড়ী ঢল ও অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে শান্তিগঞ্জের সুরমা, মহাসিং, নাইন্দা নদী, কালনী নদী, লাউগাঙ্গ নদ-নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ফসল রক্ষা বাঁধে পানির চাপ বেড়েছে। ফসল রক্ষা বাঁধগুলি এখনো ভাল রয়েছে। নিয়মিত ভাবে পিআইসিদের সহিত যোগাযোগ সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে তদারকী বৃদ্ধি সহ সার্বক্ষণিক সহায়তা ও দিক নির্দেশনা প্রদান করছি।