ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় আশ্রায়ণ প্রকল্পের একটি ঘর এখন কার্যকলাপের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রতিবেশীদের মাঝে অস্বস্তি ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রামে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ওই ঘরটি বরাদ্দ পেয়েছেন মো. ফারুক শেখ নামে এক ব্যক্তি। তার বাবা পার্শ্ববর্তী গোবিন্দপুর গ্রাম নিবাসী মো. জিন্নাহ শেখ একজন প্রতিষ্ঠিত কৃষক। তিনি ২৫/৩০ বিঘা কৃষি জমির মালিক। বাড়িতে তিন তলা ভিতের ওপর একটি একতলা বিল্ডিং রয়েছে। এই সচ্ছল পরিবারের সন্তান ফারুকের দরিদ্রের ঘর পাওয়া নিয়ে এলাকায় বিতর্ক থাকলেও নতুন করে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে এর অপব্যবহার নিয়ে।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ঘরটি সারাদিন তালাবদ্ধ থাকে। সন্ধ্যায় ফারুক আসেন জলসার আসর বসাতে। এটি যেন তার বাংলো বাড়ি! প্রায়শই ঘরটিতে বহিরাগত নারী-পুরুষের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। দরজা বন্ধ করে ভেতরে তাস, জুয়া, নেশার আড্ডা চলে। সম্প্রতি এক রাতে ঘরটি থেকে এক নারীসহ ফারুক ও তার সহযোগীদের আটক করেন এলাকাবাসী। পরে ওই নারীকে তার অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হলেও কৌশলে লাপাত্তা হয়ে যান ফারুক ও তার সহযোগীরা।
প্রতিবেশী রিনা বেগম বলেন, আশ্রায়ণ প্রকল্পের এ ইউনিটে মোট চারটি ঘর রয়েছে। এর একটিতে ফারুক অপর তিনটিতে আমিসহ অন্যরা বসবাস করছি। কিন্তু ফারুকের কারণে বর্তমানে আমাদের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। বহিরাগত নারী-পুরুষের আনাগোনায় লজ্জাজনক অবস্থার মধ্যে থাকতে হয়। ঘরের ভেতর থেকে নেশাজাতীয় দ্রব্যের গন্ধ ভেসে আসে। বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে থাকতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে ফারুক শেখের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সেটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও তিনি এলাকায় না থাকায় এ ব্যাপারে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. সেলিম মোল্লা ওই ঘর থেকে বহিরাগত নারী উদ্ধারের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ‘ফারুকের কিছু ভুলত্রুটি আছে। এনিয়ে আপনাদের কিছু করার দরকার নেই। নম্বর দিয়ে যান, ফারুককে যোগাযোগ করতে বলব। ’
আর ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন নবাব বলেন, আমার এলাকা, কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে এলাকার কেউ ফারুককে ভালো বলে না। আপনারা আশপাশে খোঁজ নেন, সব জানতে পারবেন।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘কিছু অভিযোগের কথা শুনেছি। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ভূমিকে (এসিল্যান্ড) তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’