টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখল নিয়ে যোবায়ের ও সাদপন্থিদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে রক্তাক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত ভোর রাতে সংঘর্ষে তিনজন নিহত এবং প্রায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে আজ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে ওলামা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ সম্মেলনের ঘোষণা দেন।
তিনি লিখেছেন, ‘টঙ্গী ইজতেমার ময়দানে রাতের অন্ধকারে সাদপন্থিদের অতর্কিত হামলায় হতাহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনার প্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণে ওলামা সম্মেলন হবে। সবাইকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানাই।’
টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষ শুরু হয় ভোর রাত ৩টার দিকে। স্থানীয়রা জানান, তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর দিয়ে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন দিক থেকে সাদপন্থিরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় ভেতরে অবস্থানরত যোবায়েরপন্থিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পাল্টা আক্রমণ করে সাদপন্থিরা।
উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সাদপন্থিরা ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণ নেয়। সংঘর্ষের ফলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (৭০) এবং ঢাকার দক্ষিণখানের বাসিন্দা বেলাল (৬০)।
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের পরিচয় জানা গেছে:
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আব্দুর রউফ (৫৫)
- ময়মনসিংহের মজিবুর রহমান (৫৮)
- সাভারের ফয়সাল (২৮)
- নরসিংদীর তরিকুল (৪২)
- চট্টগ্রামের সাহেদ (৪৪)
- নারায়ণগঞ্জের আনোয়ার (৫০)
- সাতক্ষীরার ফোরকান আহমেদ (৩৫)।
অন্যান্য আহতদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গুরুতর আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সাদপন্থিদের প্রভাবশালী নেতা মুয়াজ বিন নূর এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমরা ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণে আছি। যোবায়েরপন্থিদের আক্রমণে আমাদের একজন ভাই শহীদ হয়েছেন।’
এখনও ইজতেমা ময়দানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি শান্ত করতে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ সংঘর্ষের ফলে টঙ্গী এলাকায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বায়ান্ন/এএস