ঢাকা, মঙ্গলবার ৭ মে ২০২৪, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩১

উদ্বোধনের পরই বিআরটিসি বাস আটকে দিলেন বাস মালিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বুধবার ১০ অগাস্ট ২০২২ ০৭:৪৮:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

উদ্বোধনের একদিন পরেই ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা রুটের বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন জেলার বাস মালিকরা। এ নিয়ে বোয়ালমারীবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিআরটিসি বাস চলাচল করতে দেওয়া না হলে বোয়ালমারী উপজেলায় ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির কোনো বাস ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।  

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে দাবি ওঠে বিআরটিসি বাস চলাচলের। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ ফরিদপুরের নগরকান্দা থেকে বাস চালু করে।  

পরে স্থানীয়দের দাবির মুখে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বোয়ালমারী থেকে বিআরটিসি বাস চালু করে কর্তৃপক্ষ। উদ্বোধনের পরদিন আজ বুধবার সকাল ৭টায় বোয়ালমারী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার গুলিস্তানের উদ্দেশে রওনা হয় একটি বিআরটিসির বাস। পথে ভাঙ্গা বাস টার্মিনালের কাছে বাসটি আটকে দেয় বাস মালিক সমিতির লোকজন। বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। ফলে চরম বিপাকে পড়েন বাসটির যাত্রীরা।  

বাসের একাধিক যাত্রী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানান, ভাঙ্গা বাস টার্মিনালে আসার পর বেশ কয়েক ব্যক্তি বাসের চালকের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নেন। তারা বাসের চালক ও হেলপারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। বাসের যাত্রীদের সঙ্গেও তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দেওয়ার খবর বোয়ালমারীতে পৌঁছালে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বোয়ালমারীর সব শ্রেণী পেশার মানুষ বিআরটিসি বাস বন্ধের তীব্র নিন্দা জানান এবং শিগগিরই বাস চলাচলের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান প্রশাসনের কাছে। একই সঙ্গে তারা ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

বোয়ালমারীর বেশ কয়েকজন ক্ষুব্ধ ব্যক্তি জানান, বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা হলে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির কোনো গাড়িই বোয়ালমারীর ওপর দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হবে না।  

বিআরটিসির (কুমিল্লা ডিপো) ম্যানেজার (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান জানান, বিআরটিসির বাস বন্ধ করার কোনো এখতিয়ার নেই জেলা বাস মালিক গ্রুপের। পরিবহন সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধ পরিকর। সেই হিসেবে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা ঠিক হয়নি।

ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান বলেন, বিআরটিসি সারাদেশের ২৩ রুটে যে রুট পারমিট দিয়েছে সেখানে কোনো উপজেলার অনুমতি নেই। তাছাড়া জেলা বাস মালিক গ্রুপ থেকেও অনুমতি নেয়নি। ফলে আমরা বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।  

এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, বাস চলাচলের বিষয়ে একটি ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আশা করছি সমস্যাটির সমাধান হয়ে যাবে।

পুলিশ সুপার বলেন, এছাড়া বিআরটিসির পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।