একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যেসব আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই আসনগুলোর দলীয় প্রার্থীরা আবারও নৌকার মাঝি হচ্ছেন। হাতেগোনা ৩-৪টি আসনে পরিবর্তন ছাড়া উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া নৌকার বেশিরভাগ প্রার্থীই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার দায়িত্ব পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্য।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে বিভিন্ন কারণে ৩০টির অধিক আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া ৬টি সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল। সেই সব আসনে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। প্রায় সবগুলো আসনেই নৌকার প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছিলেন। উপনির্বাচনে যারা নৌকার প্রার্থী হয়েছিল, তারাই আবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন চাচ্ছেন। এজন্য কিনেছেন দলীয় মনোনয়ন ফরমও।
উপনির্বাচনে যারা দলীয় প্রার্থী ছিলেন তারাতো কাজ করার সঠিক সময় পায়নি। তাদের মেধা কিংবা কাজের যোগ্যতা দেখার সুযোগ তো দিতে হবে। এইতো কয়েক দিন আগে তিনটি আসনে উপনির্বাচন হয়েছে, তারা এমপি হয়েছেন ঠিকই কিন্তু কাজের সময়টা পেল কই। আমাদের নেত্রীও উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া নৌকার প্রার্থীদের আবারও সুযোগ দিতে চান। তিনি সেই ব্যাপারে নমনীয়তা দেখাতে পারেন। তবে তিন-চারজনের ব্যাপারে কিছু অভিযোগ উঠেছে, সেই কারণে হয়তো কয়েকজন বাদও যেতে পারে
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা (উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া নৌকার প্রার্থীরা) আবার নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন। তারা এখানে মনোনয়ন চায়, আমরা তাদেরকে এখানে মনোনয়ন দিতেও পারি। কারণ, তারা তো কাজ করার কোনো সুযোগ পায়নি। সেই সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি যদি আমরা মনে করি, এই প্রার্থী এলাকাকে, পার্টিকে কিছু দিতে পারে, তার সেই অ্যাবিলিটি আছে, তার সেই যোগ্যতা আছে, সে ক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করব।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপনির্বাচনে যারা দলীয় প্রার্থী ছিল তারা আবার নৌকার টিকিট পেতে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছেন। কেউ বাসা আবার কেউ অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন। অল্প সময়ে নিজের সব কিছু দিয়ে কাজ করতে পারেননি বলেও জানাচ্ছেন বোর্ডের সদস্যদের। আরেকবার যেন সুযোগ দেওয়া হয়, নেত্রীর সামনে যেন একবার তার নামটা বলা হয়, সেই সুযোগটাই সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের কাছে আবদার করছেন উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া নৌকার প্রার্থীরা। তবে উপনির্বাচনের আসনগুলোতে একাধিক প্রার্থীই এবার দলীয় মনোনয়ন চাচ্ছেন।
তারা (উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া নৌকার প্রার্থীরা) আবার নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন। তারা এখানে মনোনয়ন চায়, আমরা তাদেরকে এখানে মনোনয়ন দিতেও পারি। কারণ, তারা তো কাজ করার কোনো সুযোগ পায়নি। সেই সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি যদি আমরা মনে করি, এই প্রার্থী এলাকাকে, পার্টিকে কিছু দিতে পারে, তার সেই অ্যাবিলিটি আছে, তার সেই যোগ্যতা আছে, সে ক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করব
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের এক সদস্য বলেন, উপনির্বাচনে যারা দলীয় প্রার্থী ছিলেন তারাতো কাজ করার সঠিক সময় পায়নি। তাদের মেধা কিংবা কাজের যোগ্যতা দেখার সুযোগ তো দিতে হবে। এইতো কয়েক দিন আগে তিনটি আসনে উপনির্বাচন হয়েছে, তারা এমপি হয়েছেন ঠিকই কিন্তু কাজের সময়টা পেল কই। আমাদের নেত্রীও উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া নৌকার প্রার্থীদের আবারও সুযোগ দিতে চান। তিনি সেই ব্যাপারে নমনীয়তা দেখাতে পারেন। তবে তিন-চারজনের ব্যাপারে কিছু অভিযোগ উঠেছে, সেই কারণে হয়তো কয়েকজন বাদও যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ১৮ থেকে ২১ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। এই চার দিনে মোট ৩ হাজার ৩৬২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। ঢাকা বিভাগে বিক্রি হয়েছে ৭৩০টি ফরম। চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৫৯টি, সিলেট বিভাগে ১৭২টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৯৫টি, বরিশাল বিভাগে ২৫৮টি, খুলনা বিভাগে ৪১৬টি, রংপুর বিভাগে ৩০২টি এবং রাজশাহী বিভাগে ৪০৯টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। কয়েকটি বাদে প্রতিটি আসনে নৌকার মাঝি হতে লড়ছেন ১১ জন করে।