ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

একটি স্কুল: কলেজে উন্নীতের পথে

Author Dainik Bayanno | প্রকাশের সময় : শনিবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৮:৩৬:০০ অপরাহ্ন | সাহিত্য

জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের এডভোকেট খলিলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ইউনিয়নের কৃতি সন্তান, শিক্ষানুরাগী, দানবীর, সমাজসেবক  ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবি এডভোকেট খলিলুর রহমান এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়াও তিনি মামুন স্মৃতি পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, হাজেরা-মোকছেদ উচ্চ বিদ্যালয়, হাছনা-মফিজ উচ্চ বিদ্যালয় ও মল্লিক মন্ডল দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। সে হিসেবে সহজেই বুঝা যায়, তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার কারিগর। আর এ প্রতিষ্ঠানগুলোর গন্ডি পেরোনের পরবর্তী ধাপের জন্য শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত বা মান-সম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব বোধ করছে। তাই স্থানীয় শিক্ষা সচেতন মহল অনেক দিন আগে থেকেই প্রতিষ্ঠাতার নিকট একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছেন। অবশেষে স্থানীয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষা সচেতন মহলের সে দাবি বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে।

১৭ ফেব্রুয়ারি ছিল বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের দিন। প্রধান শিক্ষক আব্বাছ আলী আকন্দের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আঃ রহিম রাশেদী বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্কুল প্রতিষ্ঠাতা এডভোকেট খলিলুর রহমান এবং তার সহধর্মিনী, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যক্ষ বর্ণালী হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রতিষ্ঠানটিকে স্কুল থেকে কলেজে উন্নীতকরণের দাবি রাখেন। ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে পূর্বের বক্তার দাবিটি সময়োপযোগী হিসেবে একাত্মতা প্রকাশ করেন। সেই সাথে তা বাস্তবায়নে স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট জোর সুপারিশ করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যখন যা চাও, তখন তা যেন পাও” লেখাপড়ার উদ্দেশ্য এটাই। কলেজ ছাড়া লেখাপড়া তথা জ্ঞানার্জনের পূর্ণতা পায় না। স্কুল প্রতিষ্ঠাতা এডভোকেট খলিলুর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন- “পরিশ্রম ছাড়া জীবনে কেউ উন্নতি করতে পারে না। পরিশ্রম ছাড়া অর্থ ও ধন-সম্পদ অর্জনের উপায় পাপ।” তিনি আরও বলেন, উত্তরাধিকারী হিসেবে অঢেল সম্পত্তির মালিকও যদি পরিশ্রম না করে শুধু বসে বসে খায় তাহলে একদিন সব শেষ হয়ে যাবে। তাই তিনি সকলকে পরিশ্রমী হতে উপদেশ দেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি এক কবিতাংশের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “এমন জীবন করিবে গঠন, মরণে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন।” সবশেষে তিনি তার প্রিয় প্রতিষ্ঠানটিকে স্কুল থেকে কলেজে উন্নীতকরণের ইচ্ছা পোষণ করেন। তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, মনে হয় এটা তার জীবনের শেষ কাজ হিসেবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন। আল্লাহ যেন তা বাস্তবায়নের তৌফিক দেন। সাথে সাথেই উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মুহুর্মুহু করতালির শব্দ শোনা যায়। সে সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্কুল বাউন্ডারির দাবি ওঠে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ বর্ণালী হোসেন অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে বলেন- “বড় পরিসর মানুষের মনকেও বড় করে।” তিনি  আরও বলেন, বর্তমান প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা যেভাবে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত হচ্ছে, তা ঠেকাতে হবে। তা না হলে তারা মানুষের মত মানুষ হতে পারবে না। আলোচনা শেষে অতিথিবৃন্দ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

 

 

কামরুল হাসান: (লেখক: সাংবাদিক ও ডিরেক্টর- বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাব এবং সাবেক শিক্ষক ও এনজিও কর্মকর্তা)