জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আমরা ক্ষমতার ভারসাম্য চাই। আইনের সংস্কার চাই, যাতে একজন প্রধানমন্ত্রী যা খুশি তা করতে না পারেন। আমরা নির্বাচন কমিশন আইনের সংস্কার চাই। নির্বাচনকালীন সময়ে কমিশন যাতে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে, নির্বাচন কমিশনকে সে ক্ষমতা দিতে হবে। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, জনগণের মাধ্যে আমাদের যে গ্রহণযোগ্যতা আছে তা আগামী নির্বাচনে প্রমাণ হবে।
বুধবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২৫ বছর আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আনুষ্ঠানিক ভাবে আনুপাতিক হারে যে নির্বাচনের দাবি করেছিলেন, এতদিন পরে আজ প্রায় সকল দলই আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কথা ভাবছেন। নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে। বিদ্যমান পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমাদের সংলাপে ডাকেননি, এটা অন্তবর্তীকালীন সরকারের এখতিয়ার। আমাদের কাছে সহায়তা চাইলে, জাতীয় পার্টি প্রস্তুত আছে। ২০১০ সালে সংসদে আমি বিচারপতি নিয়োগের আইন বিষয়ক একটি প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। বাছাই কমিটি আইনটি পাশ করতে সুপারিশ করেছিলো। কিন্তু, আওয়ামী লীগ সরকার আইনটি পাশ করেনি। সংবিধানের ১১৬ ধারার কারনে, রাষ্ট্রপতি অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ ও বদলীর মাধ্যমে করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এই ক্ষমতা বাতিল করতে হবে। সংবিধানের ৭০ ধারা বাতিল করতে হবে, যাতে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আইন প্রনয়ণে স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। তিনি বলেন, আমরা উপজেলা পরিষদকে আবারো শক্তিশালী করবো। ১৯৮৩/৮৪ সালের মত শক্তিশালী উপজেলা পরিষদ চাই আমরা।
মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, বাংলাদেশের ঘুণেধরা সমাজে যুগান্তকারী পরিবর্তন করেছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশে ৩৬৪টি উপজেলা পরিষদ সৃষ্টি করেছিলেন। উপজেলা পরিষদে ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১৮ জন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রীয় সেবা জনগণের দুয়ারে পৌঁছে দিতে সাফল্য পেয়েছিলেন। প্রয়াত বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে দিয়ে ঔষধনীতি করেছিলেন, দেশের মানুষ এখন স্বল্প দামে মানসম্মত ঔষধ পাচ্ছে। আবার, শতাধিক দেশে বাংলাদেশ এখন ঔষধ রফতানী করছে। ব্যাক টু ব্যাক এলসির মাধ্যমে দেশের তৈরী পোশাক শিল্পকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উপজেলা পর্যায়ে আদালত ও বিভাগীয় পর্যায়ে হাই কোর্টের বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করে গণমানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের পর থেকে বিচারক নিয়োগে দলীয়করণ শুরু হয়েছে। এরশাদের দেশ পরিচালনার সময়ে কোথাও দলীয়করণ ছিল না।
তিনি বলেন, কেউ ইচ্ছে করলেই জাতীয় পার্টিকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না। কারণ, দেশের মানুষের মাঝে জাতীয় পার্টির গ্রহণযোগ্যতা আছে।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ রাজুর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আখতার, আলমগীর সিকদার লোটন, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, মোঃ জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মোঃ আরিফুর রহমান খান, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ সেলিম, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, জাতীয় কৃষক পার্টির আহ্বায়ক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় শ্রমিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ শান্ত, জাতীয় তরুণ পার্টির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান মোড়ল, জাতীয় ছাত্র সমাজের সদস্য সচিব আরিফ আলী।
উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম মিলন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হেনা খান পন্নি, হারুন অর রশীদ, এ্যাড. লাকী বেগম, মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, মেজর অব. সরদার আনিসুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার মাইনুর রাব্বী চৌধুরী রুম্মন, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ সামছুল হক, শামীম আহমেদ রিজভী, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ হুমায়ুন খান, আনোয়ার হোসেন তোতা, কাজী আবুল খায়ের, মোঃ আব্দুল হান্নান, সুলতান মাহমুদ, এমএ রাজ্জাক খান, মাসুদুর রহমান মাসুম, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন মৃধা, এমএ সুবহান, নুরুল হক নুরু, প্রিন্সিপাল মোস্তফা চৌধুরী, মাহমুদ আলম, ডা. সেলিমা খান, হাফেজ ক্বারী ইসারুহুল্লাহ আসিফ, কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ুন কবির, হাবিবুর রহমান, সরদার নজরুল ইসলাম, সোলায়মান সামি, জাকির হোসেন খান, এ্যাড. ওয়াহাব, মেহেদী হাসান শিপন, আরিফুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, আল আমিন সরকার, ছাত্র সমাজ এর আহ্বায়ক মারুফ ইসলাম তালুকদার প্রিন্স।
বায়ান্ন/সালেহ্