দেশব্যাপী চলমান কারফিউ ও কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গল প্রায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েছেন।
বাংলাদেশে চায়ের রাজ্য হিসেবে পরিচিত শ্রীমঙ্গল। এখানকার সারি সারি চা-বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য ও দশর্নীয় স্থান মুগ্ধ করে পর্যটকদের। তাই সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে। কিন্তু কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর থেকে শ্রীমঙ্গলে কমতে শুরু করেছিল পর্যটকের সংখ্যা। গত প্রায় ১০ দিনে নতুন করে কোনো পর্যটক আসেননি শ্রীমঙ্গলে। আগে যেসব পর্যটক এসেছিলেন তাঁরা ফিরে গেছেন। এখন নেই বললেই চলে পর্যটক শ্রীমঙ্গলে।
দৈনিক জনসংগ্রাম পত্রিকা'র সম্পাদক ও প্রকাশক, সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, দেশের পর্যটকদের পাশাপাশি অনেক বিদেশি পর্যটক বুকিং বাতিল করে দিয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতি কথা বিদেশি পর্যটকেরা জানতে পেরেছেন। দূতাবাস থেকে স্ব–স্ব দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ জন্য বিদেশি পর্যটকেরা ঘুরতে বের হচ্ছেন না। বিদেশ থেকেও কেউ আসছেন না।
তিনি আরও বলেন, বিদেশি পর্যটকেরা যখন দেশের বাইরে যান, তখন প্রায় তিন-চার মাস আগেই পরিকল্পনা শুরু করেন। আমাদের দেশে হয়তো কিছুদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু বিদেশি অনেক পর্যটকই বাংলাদেশের আসার পরিকল্পনা বাতিল করতে পারেন। শীতের শুরু অর্থাৎ অক্টোবরে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ঘুরতে বের হন। আর মাত্র কয়েকটি মাস বাকি। পরিস্থিতি যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে যাবে। দেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান তিনি।
শ্রীমঙ্গলে পর্যটক কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে অনেক রেস্তোরাঁ আছে। শ্রীমঙ্গল হবিগঞ্জ রোডস্থ গাউসিয়া রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মোঃ আব্দুস সামাদ বলেন, শ্রীমঙ্গলের অনেক রেস্তোরাঁ পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে। গত ১০ দিন রেস্টুরেন্ট মালিকেরা লোকসানে আছে। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পর্যটকেরা শ্রীমঙ্গল না আসায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি বলে তিনি জানান।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাবেক সভাপতি ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের মালিক সেলিম আহমেদ বলেন, গত কয়েক দিন পর্যটক নেই। সব হোটেল রিসোর্ট প্রায় ফাঁকা। দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দূরপাল্লার গাড়ি সঠিক সময়ে না চলা, ট্রেন বন্ধ থাকা ও কারফিউ জারি থাকায় পর্যটকেরা আসছেন না। অনেকে এই পরিস্থিতিতে নিজস্ব গাড়ি বের করতে বা পরিবার নিয়ে ঘুরতে সাহস পাচ্ছেন না। তিনি আরও বলেন, অনেকে ফেসবুকে প্রচারণা ও মার্কেটিং করেন। ইন্টারনেট পুরোপুরি সচল না থাকায় কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এ ভাবে চললে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে তিনি জানান।