সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় এক গৃহবধূর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের খুশিউড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সরুফা বেগম (৩৫) নামের ওই নারীকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবদুলাল ধর অ্যাসিড নিক্ষেপের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরুফা বেগমের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, কে বা কারা তার ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করেছে, অন্ধকার থাকায় চিনতে পারেননি তিনি। তবে এক ব্যক্তির মাথায় ক্যাপ পড়া ছিল বলে তিনি জানিয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে ধরার চেষ্টা করছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সরুফা বেগমের স্বামী মোজাম্মেল হক সৌদি আরবে থাকেন। সরুফা বেগম তার বৃদ্ধ শাশুড়ি, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে পাশের নলকূপ থেকে পানি আনতে যান। এ সময় তার ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করে এক ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে তার চিৎকার শুনে ঘর থেকে শাশুড়ি ও ছেলেমেয়েরা বের হন। একই সঙ্গে আশপাশের লোকজন এসে তাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যান।
সরুফা বেগমের ছোট ভাই জামাল হোসেন শুক্রবার সকালে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বলেন, সরুফা বেগমের মুখের বাঁ পাশে অ্যাসিড লেগেছে। দুই ঠোঁটের একাংশ ও শরীরের বাঁ পাশে কিছু জায়গা দগ্ধ হয়। চিকিৎসা দেওয়ার পর এখন তিনি সুস্থ আছেন। তবে কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে। তার বোনজামাই মোজাম্মেল হক ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে আছেন। সর্বশেষ দুই বছর আগে বাড়িতে এসেছিলেন।
সরুফা বেগমের দেবর মুকসেদ আলী বলেন, তিনি ঘটনার সময় বাজারে ছিলেন। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে দেখেন, সরুফা বেগম আহত, চিৎকার করছেন। পরে তার শরীরে পানি ঢেলে দ্রুত হাসপাতালে পাঠান তারা। তিনি আরও জানান, ঘরের পূর্ব দিকে নলকূপটি অবস্থিত। সেখানে গাছগাছালিতে ঘেরা থাকায় জায়গাটি অন্ধকার ছিল।
একই গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রবিন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। পরে খোঁজাখুঁজি করে বাড়ির পাশেই পথে একটি কাচের বোতল পাওয়া যায়। এটি স্যালাইনের বোতল ছিল। এটির ভেতরেই ছিল অ্যাসিড। কাপড় পুড়ে যাওয়া দেখে এবং গন্ধ শুঁকে সরুফা বেগমের ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।