চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিষপাড়া নামক এলাকায় এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গুলিবিদ্ধদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ। তাৎক্ষনিকভাবে আহতদের নাম বা পরিচয় নিশ্চত হওয়া যায়নি। তারা রাউজানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সূত্র জানায়, বিএনপির চেয়ারপারসন উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার ও ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মাঝে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে সাধারণ মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিবদমান দুই গ্রুপের মাঝে অন্তত ৪ বার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহাবুবুর রহমান জানান, গোলাগুলির সংবাদ পেয়েছি। সেখানে গিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম জানান, গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
জানা যায় বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে সৈয়দ শাহ সড়কে কয়েকদফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই দোকানপাট বন্ধ করতে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এরপর এক্সেস রোড এলাকায় অস্ত্র এবং গুলি হাতে জড়ো হতে থাকে শতাধিক যুবক।
এরপর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে তাদের মধ্যে। এ সময় একপক্ষ আরেকপক্ষের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং ধাওয়া দেয়। এ সময় উভয়পক্ষ ‘জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই করো’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘আমি সৈয়দ শাহ রোড দিয়ে এক্সেস রোডে প্রবেশ করার পরপরই হঠাৎ দুই দিক থেকে দুই দল এসে মারামারি করতে থাকে। ওই সময় তাদের একটি পক্ষ গুলি ছোঁড়ে। মানুষজন সবাই আতঙ্কে যে যার মত সরে পড়ে। আমিও আতঙ্কে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করি।'
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার সময় আশপাশের এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। পুরো সড়ক অন্ধকারে। একটি পুলিশের গাড়িও চোখে পড়েছে।’
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী গোলাগুলির বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বিষয়টি অস্বীকার করে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘ওই এলাকায় স্থানীয় বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে সংঘর্ষের সময় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। দুপক্ষই একে অপরকেই ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে।’
তিনি বলেন, ’পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে অবস্থান করছে। এখন মোটামুটি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।’