ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বহুল প্রতিক্ষিত বগুড়া-সিরাজগঞ্জে রেলপথ প্রকল্প দ্রুত শুরু হবে

বগুড়া প্রতিনিধিঃ | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৩ এপ্রিল ২০২২ ০৮:১৬:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

বগুড়াসহ এ অঞ্চলের মানুষদের বহুল প্রতিক্ষিত বগুড়া- সিরাজগঞ্জ রেলপথ প্রকল্পের কাজ দ্রুতই শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সর্বশেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন শনিবার এই প্রকল্পের বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ অংশের এ্যালাইমেন্ট ও প্রস্তাবিত নতুন রেলজংশন পরিদর্শনকালে জানান, এর বাস্তবায়ন কাজ চলতি বছরের শেষ নাগাদ শুরু হতে পারে। প্রকল্পের বগুড়া অংশ পরিদর্শন কালে তিনি বলেন, এটি শুধু বগুড়াবাসীর চাহিদা নয়, গোটা উত্তরাঞ্চলের দাবি। প্রধানমন্ত্রী এঅঞ্চলের দাবি এবং চাহিদা বিবেচনা করে এই প্রকল্পের ঘোষানা দিয়েছিলেন। এটি এখন বাস্তবায়নের পথে।

বগুড়া- সিরাজগঞ্জ ডুয়েলগজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ভারত সরকারের লাইন অব ক্রেডিটের অর্ন্তভুক্ত হলেও মোট ব্যয়ে বাংলাদেশ সরকারের অংশ থাকছে অর্ধেকের কাছাকাছি। প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে রেলমন্ত্রী শনিবার সকালে ঢাকা থেকে বগুড়া আসেন। তিনি এর এ্যালাইনন্টে পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি রেল চলাচলে বগুড়ার যানজট পরিস্থিতি জানতে শহরের কয়েকটি রেলগেট এবং শহরের কয়েকটি সড়কও  পরিদর্শন কালে বগুড়া অংশে সম্ভাব্য আন্ডারপাস ও ওভারপাসের জন্য কয়েকটি পয়েন্টও দেখেন। এই প্রকল্পে বগুড়া শহর ও শহরের বাইরের পয়েন্টে এগুলো নির্মাণ করা হবে। পরে তিনি বগুড়া রেলস্টেশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, নকশাসহ প্রয়োজনী সবকিছু চুড়ান্ত করার কাজ চলছে। সব কিছু মিলিয়ে এর ব্যায় হবে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা  টাকা।  তিনি জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বগুড়া থেকে রেলপথে ঢাকা যেতে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দুরত্ব কমবে। এতে যাতায়াত সময়ও অনেক কমবে। রেলমন্ত্রীর সঙ্গে এসময় রেলওয়ে সচিব মোঃ হুমায়ুন কবির, প্রকল্প পরিচালক মোঃ সুবক্তাগীন,প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজী, রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক(অবকাঠামো) মোঃ কামরুল আহসান প্রকল্পের ভারতীয় ডেপুটি টিম লিডার কে শ্রীনিবাস রাও, বগুড়া জেলা প্রশাসক মোঃ জিয়াউল হক, পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার, বগুড়া জেলা আওয়ামীলী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুসহ রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী পরে বগুড়া- সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে প্রকল্পের বগুড়ার টেক অব পয়েন্টে এবং বগুড়ার রানীরহাট ও শেরপুরে প্রস্তাবিত রেল স্টেশন পরিদর্শন করেন। সুত্র জানায়, বগুড়ার অংশে রেলপথ বগুড়া থেকে রানীরহাট ও শেরপুর হয়ে নির্মান হবে। তবে এটি বগুড়া রেলস্টশন হয়ে, না বগুড়ার দ্বিতীয় বাইপাস হয়ে যাবে, সেটি নিয়ে আলোচনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত বগুড়ার বর্তমান  রেলস্টেশনই প্রকল্পে মুল থাকছে। দ্বিতীয় বাইপাস সড়ক হয়ে সেখানে প্রকল্পের নতুন স্টেশন নির্মানের বিষয় আর থাকছে না। আর এই রেলপথের জন্য বগুড়া শহরের যানজট পরিস্থিতি যেন না বাড়ে সে জন্য ওভারপাস অথবা আন্ডরপাস নির্মান করা হবে।

এদিকে প্রকল্প সংশ্লিস্টরা জানান, বর্তমানে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের হালনাগাদায়ন ও বিশদ নকশা প্রনয়নের কাজ চলছে। এর পরেই শুরু হবে দরপত্রের প্রক্রিয়া। বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মুনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মান হবে প্রায় ৭০ কিলোমিটার। এর মধ্যে থাকছে নুতন রেল জংশন ও ওভার ও আন্ডারপাস। বর্তমানে বগুড়া থেকে ঢাকায় যেতে ঈশ^রদী হয়ে ঘুরে যেতে দুরত্ব বেশি হওয়ায় সময়ও অনেক বেড়ে যায়। প্রকল্প সংশ্লিস্টরা জানান, প্রকলপ বাস্তবায়ন হলে বগুড়া ঢাকা যাতায়ত ২ ঘন্টারও বেশি সময় কমে যাবে। বগুড়া থেকে ট্রেনে ৪ ঘন্টায় ঢাকায় যাওয়া যাবে। এতে যাত্রীদের সময় বাঁচবে। প্রকল্প পরিচালক জানান, বগুড়া- সিরাজগগঞ্জ ডুযেলগেজ রেললাইনে নতুন রেলপথ নির্মান হবে প্রায় সাড়ে ৭০ কিলোমিটার। এই প্রকল্পে সরকার প্রায় ২ হাজার কোটি এবং ভারত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যায় করবে।  প্রকল্পে ২টি নতুন রেল জংশনসহ ৭টি রেলস্টেশন থাকছে। এগুলো হলো- রানীরহাট, আড়িয়াবাজার, শেরপুর, চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, কৃষ্ণদিয়া ও সিরাজগঞ্জ। প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯শ’ একর জমি অধিগ্রহন করা হবে। এর মধে বগুড়ার অংশে প্রায় ৫শ এবং সিরাজগঞ্জ অংশে ৪শ একর ভুমি অধিগ্রহন করা হবে বলে প্রকল্প পরিচালক জানান।