বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়াতে কার্ডধারী ও প্রকৃত জেলেরা সরকারি বরাদ্দের চাল পাননি, যারা পেয়েছে তারা জেলে নয় মর্মে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে ওই ইউনিয়নের ২ ও ৯ নং ওয়ার্ড জেলে পাড়ার জেলেরা যৌথ ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি দায়ের অভিযোগ করেছে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী জেলেদের পরিবার সুত্রে জানা যায়, সমুদ্র থেকে মৎস্য আহরণ করেই জীবন-জীবিকা চলে জেলেদের,এরই মধ্যে সাগরে মাছ ধরা সরকারি ভাবে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে জেলেরা। কর্মহীন হয়ে পড়া জেলেদের জন্যে সরকারি বরাদ্দের চাল আসলেও পুকুরিয়া ইউনিয়নে বিতরণকৃত চাল পাননি কার্ডধারী ও প্রকৃত জেলেরা। যারা চাল পেয়েছে তারা জেলে নয় বরং অনেকেই ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও সম্পদশালী।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে ২ নং ওয়ার্ডস্থ জেলে পাড়ার রামপদ দাশ, পুলিন দাশ, মনহির দাশ, প্রদীপ দাশ, জগন্নাথ দাশ, অভিরাম দাশ, মেঘ দাশ, লিটন দাশ, পশুরাম দাশ, মহর লাল দাশ, ক্ষুদিরাম দাশসহ অন্তত অর্ধশতাধিক জেলেরা বলেন, সাগর থেকে মৎস্য আহরণই আমাদের জীবন- জীবিকার একমাত্র ভরসা। সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি, এতে আমাদের পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে কালাতিপাত করতেছি, এরই মধ্যে জেলেদের জন্যে সরকারের তরফ থেকে আসা বরাদ্দের চাল আমরা প্রকৃত জেলেরা কেউ পাইনি, অথচ আমাদের কাছে জেলে কার্ড রয়েছে, পুকুরিয়াতে জেলেদের জন্যে আসা সরকারি বরাদ্দের চাল যারা পেয়েছে তারা মূলত জেলে নয়, তারা অনেকেই ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও সম্পদশালী। চেয়ারম্যান সাহেবের কাছের মানুষ বলে জানিয়েছে সুবিধা বঞ্চিত জেলেরা।
জেলেদের জন্যে আসা সরকারি বরাদ্দের চাল পেতে সুবিধা বঞ্চিত জেলেদের পক্ষ থেকে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দেওয়া একটি অভিযোগের কপি প্রতিবেদকের হাতে দিয়েছে জেলেরা।
এবিষয়ে মনির উদ্দিন (মইন), মোঃ আমজাদ, মোঃ মিয়াসহ অন্তত ৫ জন ইউপি সদস্য ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব এবিষয়ে আমাদের সাথে কোনো বৈঠক বা আলোচনা করেননি, চাল গুলো যাদের বিতরণ করেছে তাদের অনেকেই ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও সম্পদশালী এবং চেয়ারম্যান সাহেবের কাছের মানুষ।
চেয়ারম্যান সাহেব নিজের ইচ্ছে মতো তার পছন্দের লোকদের মাঝে বিতরণ করেছে। বিতরণের পর কার্ডধারী ও প্রকৃত জেলেরা আমাদের কাছে এসে মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানিয়েছে। আর সুবিধা বঞ্চিত জেলেরা এবিষয়ে ইউএনও মহোদয় বরাবরও একখানা অভিযোগ দিয়েছে বলেও জানান ইউপি সদস্যরা।
এবিষয়ে পুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসহাব উদ্দিনের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নে ৪৯৮ জন জেলের তালিকা আছে, এই পর্যন্ত চাল পেয়েছে ২৮০ জন, আরো ২শ জন জেলে এখনও পর্যন্ত চাল পাননি, যারা অভিযোগ করেছে তারা প্রথম ধাপে চাল পেয়েছে, তবুও কিছু মানুষ তাদেরকে প্ররোচনা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। বরাদ্দ অনুযায়ী ধাপে ধাপে চাল বিতরণ করা হয়েছে। যারা এবার পায়নি তারা আবার বরাদ্দ আসলে পাবে।