ঢাকা, শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১

বাউফলের শিক্ষক সংকটে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা

জাহিদ শিকদার, বরিশাল ব্যুরোঃ | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ১১ নভেম্বর ২০২২ ০৯:৫২:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

 

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রাথমিক শিক্ষা ভেঙে পড়েছে। শিক্ষক সংকটের কারনে ওই ইউনিয়নের প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা হলেও বিষয়টি নিয়ে কতৃপক্ষ উদাসীন। 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রমত্তা তেঁতুলিয়া নদীর বুকে অবস্থিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলার মূল ভূখন্ডে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম খেয়া নৌকা। দুর্গম ওই ইউনিয়নের মানুষের প্রধান পেশা মাছ শিকার  ও কৃষিকাজ। জেলে ও কৃষক পরিবারের অধিকাংশ শিশু লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবাকে মাছ শিকার ও কৃষিকাজে সহায়তা করে। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের মোট ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৫০ জন আর শিক্ষকের পদ রয়েছে ৩৩টি। কিন্তু বাস্তবে ৬টি বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন মাত্র ১৩ জন শিক্ষক। এরমধ্যে চরওয়াডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ৩ জন, দক্ষিণ চরওয়াডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ জন, চররায়সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩জন, চরকচুয়া-মিয়াজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ জন, চরব্যারেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ জন ও আসম ফিরোজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ জন শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষক সংকটের কারনে কখনও কখনও একই কক্ষে একাধিক শ্রেণীর শিক্ষার্থী একসঙ্গে বসিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, দারিদ্র্যতার কারনে এখানকার শিশুদের সহজেই স্কুলমূখী করা যাচ্ছে না।  তার উপর শিক্ষক স্বল্পতার কারনে প্রতিটি বিদ্যালয়ে পাঠদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় এখানে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন শিক্ষক বদলী এবং সংযুক্তি বন্ধ করে রাখায় এ সমস্যার সমাধানও হচ্ছে না। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার আফরোজা বেগম বলেন, এমনিতেই আমরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। তার উপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা না হলে আরও পিছিয়ে যাব। তিনি বলেন, দূর্গম জনপদ হওয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তারা নিয়মিত স্কুল পরিদর্শন করেন না। আমি চন্দ্রদ্বীপের প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকের শূণ্যপদ পূরণের জন্য জোর দাবী করছি। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাচ মোল্লা বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে মাত্র ২-৩ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। এখানে শিক্ষক সংকট থাকায় বেশ কিছু শিশু প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়ে মূলভূখন্ডের স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করছে। তিনি বলেন, শিক্ষক সংকট দূর করার জন্য উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে পদক্ষেপ নেয়া হবে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশীষ ঘোষ বলেন, বদলী ও সংযুক্তি বন্ধ থাকায় সেখানে শিক্ষক পোষ্টিং দেয়া যাচ্ছে না। তবে বদলী বা সংযুক্তির আদেশ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।