১১ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। দীর্ঘ সাত বছর পর অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। সাত বছর আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের পারফরমেন্স নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ করছেন নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে নেতাকর্মীদের সুখে-দুখে কোন্ নেতা পাশে ছিলেন-তা নিয়ে আলোচনা সর্বত্রই। এই আলোচনায় কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন।
দলীয় সূত্র জাায় ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ১৯ বছর পর ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জেলা আওয়ামী লীগকে আরো উন্নত, সমৃদ্ধ করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি থেকে আলহাজ্ব মতিউর রহমানকে সভাপতি এবং আওয়ামী পরিবারের সন্তান বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আমৃত্যু সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রইছ সাহেবের কনিষ্ঠ সন্তান ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমনকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি উপহার দেন।
সেদিন কমিটি ঘোষণার পরপই হাজার হাজার নেতাকর্মী করতালি আর স্লোগানের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। সুস্থ ও সুন্দর রাজনীতির প্রত্যাশা ছিল উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে। নেতাকর্মীদের প্রত্যাশাকে এগিয়ে নিতে ব্যারিস্টার ইমন রাজনৈতিক পরিকল্পনায় সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত চষে বেড়াতে থাকেন। নিরলস চেষ্টায় কোভিড পরিস্থিতির পূর্বে দুইটি উপজেলায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় ও রাষ্ট্রীয় সকল অনুষ্ঠান জনস্বার্থ বাস্তবায়ন করতে নিরলসভাবে ছুটে চলতে থাকেন ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন।
দলীয় নেতাকর্মীদের সুখে-দুখে ছুটে গেছেন ব্যারিস্টার ইমন। একজন ব্যারিস্টার হিসেবে ঢাকায় অবস্থান করে নিজ পেশায় আত্মনিয়োগ করার কথা থাকলে অধিকাংশ সময় এলাকায় অবস্থান করে রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে নিজকে নিয়োজিত রেখেছেন এনামুল কবির কবির। সহজেই ব্যারিস্টার ইমনের সান্নিধ্য লাভ করতে পারায় দলীয় নেতাকর্মীরা অনেকটা উজ্জীবিত হয়ে উঠেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ভয়াবহ সংক্রমক ব্যাধী কোভিড ১৯ পরিস্থিতির শুরুতে জেলার কোনো শীর্ষ নেতাদের দেখা না গেলেও ব্যারিস্টার ইমন স্বপরিবারে টানা বছর খানেক সুনামগঞ্জে অবস্থান করেন। ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে কখনো রাতের অন্ধকারে কখনোবা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রায় ১১ হাজার পরিবারে চাল, ডাল, আলু, পেয়াজ, ভোজ্যতেল এবং স্বাস্থ্য সামগ্রী সাবান, স্যানেটাইজার, মাস্ক, পিপিই বিতরণ করেন। তাঁর স্ত্রী ব্যারিস্টার ফারজানা শিলা পরিচালিত নান্দনিক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসে শুধুমাত্র করোনা রোগীদের জন্য একটা এ্যাম্বুলেন্স প্রদান করেন। দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অকেজো এ্যাম্বুলেন্সটি দ্রুত সময়ে মেরামত করে করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত করা হয়। এই উদ্যোগ সুধীমহলে প্রসংশীত হয়েছিল।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, ২০২১ সালে শাল্লা উপজেলার নয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালগুদের উপর সাম্প্রদায়ীক হামলা হয়। এই ঘটনার পর প্রায় প্রতিদিনই ঐ এলাকায় তিনি ছুটে গেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণসহ তাদের আইনি সহায়তা প্রদানে সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। অবাধ বিচরণে অবশেষে তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। বেশ কিছু দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ম্যাডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাসায় ফিরেন। সেসময় জেলার বিভিন্ন উপসনালয়গুলোতে তাঁর আশু রোগ মুক্তির জন্য প্রার্থনা হয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে মুজিব শতবর্ষ উদযাপনে দেশের অন্য যেকোনো জেলা থেকে ব্যতিক্রমী ও আলো ঝলমলে অনুষ্ঠান পরিলক্ষিত হয় ব্যারিস্টার ইমনের নেতৃত্ব সুনামগঞ্জ জেলাতেই।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনের জায়গা নির্ধারণে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভুমিকা এক ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়। বাংলাদেশে এটা নজির বিহীন। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নির্ধারণ করতে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ডাকা হয়। সভায় পৃথকভাবে মতামতের ভিত্তিতে সুন্দরভাবে সমাধানে আসা হয়। সভার রেজুলেশন কপি উর্ধতনদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন ব্যারিস্টার ইমন।
২০১৬ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচন, ২০১৭ সালে বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর উনার আসনে উনার স্ত্রী ড.জয়া সেন গুপ্তার উপ-নির্বাচন, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন, ২০২১ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং জেলার সকল অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচন গুলোয় ব্যারিস্টার ইমন এর সরব উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়।
২০২২ শতাব্দীর প্রলয়ঙ্কারী বন্যায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিলো না সুনামগঞ্জ জেলার অধিকাংশ এলাকায়। পানিবন্দি মানুষের পাশে থেকে রান্না করা খাবার বিতরণ, শুকনা খাবার বিতরণ, জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী নিয়ে নিত্যদিন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যান ব্যারিস্টার ইমন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ বিশদভাবে উপস্থাপন করেন।
স্থানীয়রা জানান, মানুষের দুর্যোগে, নবান্নে, উৎসবে মানুষ ই তো মানুষের পাশে থাকবে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। নেতৃত্বে গতিশীলতা থাকবেই। কেননা অনেকদিনের পুরনো সমস্যা কিছুদিনেই নিরসন সম্ভব হয় না। পর্যায়ক্রমে তা বিকশিত হবে। জেলার গুনে ধরা আওয়ামী রাজনীতিকে ব্যারিস্টার বিকশিত করেছেন মাঠ পর্যায়ের পরিশ্রমী কর্মী পর্যন্ত। গত সাতটি বছর ব্যারিস্টার অনেক কিছু বিসর্জন দিয়েও সুনামগঞ্জবাসীকে অনেক কিছু দিয়েছেন।