ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় দিগন্ত জোড়া মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য। অন্য ফসলের চেয়ে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং লাভজনক হওয়ায় জেলার কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরিষার আবাদ বেড়েছে ১৩৭ হেক্টর জমিতে।
জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অফিস জানায়, চলতি বছর জেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার ৩৯২ হেক্টর জমি। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৬৮ হেক্টর জমিতে। তবে গত মৌসুমে আবাদ হয়েছিল ১৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে।
অর্থাৎ চলতি মৌসুমে গত মৌসুমের চেয়ে বাড়তি ১৩৭ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায় সদর উপজেলাসহ , সরাইল, নাসিরনগর, বিজয়নগর, নবীনগর ও আশুগঞ্জে কৃষি জমিতে হলুদের সমারোহ। দিগন্ত জোড়া ফসলী মাঠ সরিষা ফুলের হলুদ রঙ্গে শোভিত। বাতাসে দোল খাচ্ছে সরিষার ফুল। হলুদ ফুলের মুচকি হাসিতে এবার বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অফিস জানায়, বারি-১৪, ১৭ ও ১৮ সহ অন্যান্য সরিষা বপনের পর ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। সরিষা উত্তোলন করে ফের একই জমিতে বোরো আবাদ করা যায়। সরিষা গাছের পাতা মাটিতে পড়ে জৈব সারে পরিণত হয়। এতে জমির উর্বরতা বাড়ে। সরিষা চাষে উৎপাদন ব্যয়ও কম। চাষের পর একই জমিতে ধান চাষ করলে সারও কম দিতে হয়। তাই এখানকার কৃষকরা ক্রমেই সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
সরিষা চাষী কুদ্দুস মিয়া বলেন, আগে আমরা টরি সেভেন, টিএস সেভেন্টি টু, এসএস সেভেন্টি ফাইভ জাতের সরিষা চাষ করতাম। চলতি মৌসুমে আমরা অধিক ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি। এই জাতের সরিষা ৮৫ থেকে ৯০ দিনে ঘরে তোলা যায়। ফলন হয় বেশি।
সদর উপজেলার বাসুদেব এলাকার চাষী ইদ্রিস ভূইয়া জানান, তিনি গত ৭ বছর ধরে তার ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে আসছেন। চলতি বছর তিনি বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করছেন। সরিষার চাষ করতে তার বিঘা প্রতি প্রায় ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানান, চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৩৯২ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৬৮ হেক্টর জমিতে। তবে গত মৌসুমের তুলনায় বাড়তি ১৩৭ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে।
বায়ান্ন/এসএ