ভোলায় অভিযান শেষে ৪দিন যাবত জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালা ইলিশ। এক থেকে দুই কেজি ওজনের এসব ইলিশ পেয়ে জেলে ও আড়তদাররা খুশি হলেও সরকারের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, যে পরিমাণ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পেরেছে তাতে আগামীতে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাবে। রবিবার রাতে ও সোমবার সকালে ভোলার বিভিন্ন বাজারে বিপুল পরিমান ডিমওয়ালা ইলিশ দেখা গেছে।
জানা গেছে, আশ্বিন থেকে কার্তিকের পূর্ণিমার শুরু পর্যন্ত সময়ে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত সময়। ইলিশের এই প্রধান প্রজনন মৌসুমে প্রতি বছর নদ-নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ থাকে। এ বছরও নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘ ২২ দিনের বিরতির পর ২৮ অক্টোবর ইলিশ শিকার শুরু করেছে জেলেরা। তবে এ সময়ে মা ইলিশ নদীতে থাকার কথা ছিল না। কিন্তু এখনো জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে মা ইলিশ। ইলিশের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণে বড় আকৃতির পাঙ্গাশ মাছ পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন জেলে ও আড়তদাররা। তবে নিষেধাজ্ঞার সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও কেন বিপুল পরিমাণ মা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে সে বিষয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞার সময় আরো বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল বলে মত দিয়েছেন মৎস্য বিষেশজ্ঞারা।
জেলে মানিক বলেন, আমরা জেলেরা এখন এক থেকে আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ মাছ পাইতেছি। পাশাপাশি ১০-১৫ কেজি ওজনের পাঙাশ মাছ পাচ্ছি। এতে আমরা অনেক লাভবান হচ্ছি।
ব্যবসায়ী মোঃ জসিম বলেন, এখনো আমাদের জেলেদের জালে যে পরিমাণ ডিমওয়ালা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, হয়তো অভিযানটা ঠিক সময়ে হইলে এত ডিমওয়ালা ইলিশ পাওয়া যেত না। অভিযান শেষ হওয়ার পরেও দিন দিন মাছের পরিমান বাড়ছে। সরকারের উদ্দেশ্য কতটুকু সফল তা সংশ্লিষ্টরাই জানেন।
জেলে নাছিম বলেন, আমরা এখন যে মাছগুলো পাচ্ছি তা পরিমাণে বেশী ও আকার অনেক বড়। এতে আমরা দাম ভালো পাচ্ছি। বিগত দিনের লোকশান পুশিয়ে কিছু অর্থের মুখ দেখছি। তবে অভিযানের সময়টার বিষয় নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ অভিযানের সময় সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার দাবী সরকারের সফলতা আনতে হলে সময় আরো বাড়াতে হবে।
মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবি, প্রজনন মৌসুমেই সব মা ইলিশ ডিম ছাড়বে এমন নয়। ইতোমধ্যে যে পরিমাণ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পেরেছে সেগুলো রক্ষা করতে পারলেও ২০২২-২৩ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন সম্ভব হবে।
মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন বলেন, এই সময়টা ছিল ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম এবং অধিকাংশ ইলিশ মাছ এই সময়ে ডিম ছেড়েছে। এখন এই মাছগুলো আমরা যদি সংরক্ষণ করতে পারি তাহলেই আশানুরুপ ইলিশ পাব এবং আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
দেশে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায় তার তিন ভাগের এক ভাগ ভোলার। ভোলায় এ বছর ১ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।