আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ের গড়েয়া ইউনিয়নের উন্নয়নের স্বার্থে একজন যোগ্য চেয়ারম্যান চান এলাকাবাসী। এলাকার উন্নয়ন, জনগনের জন্য যে কাজ করবে এমনি যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে চায় তারা।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভোটারদের কাছে এমনি বিষয়টি জানা যায়।
জানা যায়, আগামী ২৬ তারিখ ইউপি নির্বাচনে গড়েয়া ইউনিয় থেকে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এর মধ্যে নৌকা প্রতিকে স্থানীয় পূর্ব আরাজী চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক রইছ উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটরসাইকেল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন রেজওয়ানুল ইসলাম শাহ রেদো, নৌকার বিদ্রোহী হয়ে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন সাজ্জাদুর রহমান সোহেল, আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন কামরুজ্জামান ও লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন ইউসুফ আলী।
এক ইউনিয়নের ৫জন চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দিতা করায় অনেকটাই চিন্তিত গড়েয়ার সাধারণ ভোটাররা। তবে এলাকার ভোটাররা চায় একজন সৎ যোগ্য প্রার্থীকে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গড়েয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পড়ে লড়াই করছেন পাঁচ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভোটারদের কাছে সবথেকে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন নৌকা প্রতীকের চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক রইছ উদ্দিন সাজু । অনেকেই মানুষ গড়ার এই কারীগরকে দেখতে চায় এলাকার চেয়ারম্যান হিসেবে। কেননা এলাকায় একজন শিক্ষিত ও মানুষ গড়ার এই কারীগরের মাধ্যমেই হতে পাড়ে সকল উন্নয়ন এমনটি ধারনা সাধারণ ভোটারদের তবে দলের ভিতরে সদস্যদের কিছু সমস্যা রয়েছে বলে জানা যায় ।
এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটরসাইকেল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন রেজওয়ানুল ইসলাম শাহ রেদোর বিরুদ্ধে ভিজিডি চাল আত্মসাৎ, অসহায় গরীব নারীদের সাথে খারাপ আচরণ সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করছেন ভোটাররা।
তিনি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ঠিক মত পরিষদে পাওয়া যায় না জন্ম নিবন্ধনের বা যে কোন স্বাক্ষর এর জন্য দিনের পর দিন ঘুরতে হয়।
অপরদিকে নৌকার বিদ্রোহী হয়ে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন সাজ্জাদুর রহমান সোহেলের বিরুদ্ধেও যেন অভিযোগের শেষ নেই। ইউনিয়নের বিভিন্ন অপরাধ কর্মের সাথে জড়িত সহ নিজের সুবিধার্থে বিএনপির থেকে ২০১৫ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে যোগদান করেন তিনি। এরপর থেকেই বিভিন্ন বিচার শালিসের নামে টাকা আদায় সহ অনেক অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছেন, তিনি চেয়ারম্যান হলে এলাকায় মাদক সেবন, জুয়া ও চুরি বেরে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে গড়েয়া গোপালপুর এলাকার এক ভোটার জানান।
আনারস মার্কা প্রতীকের কামরুজ্জামান নুরুল হুদা ও লাঙ্গল প্রতীকের ইউসুফ আলীরর বিরুদ্ধে সাধারণ ভোটারদের রয়েছে কিছু অভিযোগ করোনা কালীন সময়ে তাদের কোন ভুমিকা চোখে পরেনি বলে জানান এলাকার লোকজন।
গড়েয়া ইউনিয়নের গোপালপুর এলাকার পরেশ চন্দ্র রায় বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটর সাইকেল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন রেজওয়ানুল ইসলাম শাহ রেদো। তিনি তো এলাকার চেয়ারম্যান ছিলেন। কই আমদের জন্য তো কিছু উন্নয়ন করতে পারেনি। এলাকার রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে কোন কিছুতেই তিনি কোন কিছু করতে পারেনি। উল্টো বয়ষ্ক ভাতার কার্ড ভিজিডিও চাল আত্মসাত সহ বিভিন্ন অপরাধ করেছে নিজের পকেট ভরেছে। এমন চেয়ারম্যান তো আমদের প্রয়োজন নেই। গরীব মানুষদের উনি তার চাকর বা আদিয়ার প্রজা ভাবে। আমরা এমন একজন চেয়ারম্যান চাই যে শিক্ষতি সৎ ও আমাদের এলাকার মানুষের জন্য কাজ করবে।
চোঙ্গাখাতা এলাকার সুশীল চন্দ্র বলেন, সাজ্জাদুর রহমান সোহেল তো এই কিছুদিন আগেরই আওয়ামী লীগের যোগদান করলো। এর আগে সে তো বিএনপি করতো। এখন নিজের অপরাধ ঢাকা দিতে সে আওয়ামী লীগের যোগ হয়েছে। এসব আমরা বুঝি। সে যদি সত্যি আওয়ামী লীগের হতো তাহলে কখনো নৌকার বিদ্রোহী হতোনা। এখানেই বুঝা যায় সে সুবিধাবাদী। চেয়ারম্যান আমরা চাই নৗকা প্রতীকের চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক রইছ উদ্দিন। তিনি এই গড়েয়ার মানুষ গড়ার কারিগর। একজন শিক্ষিত মানুষ। আমরা তাকেই চেয়ারম্যানহিসেবে দেখতে চাই।
ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, ইউপি নির্বাচন ঘিরে জনগণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করছে। আমরা আশা করি সদর উপজেলার ২০ টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।