"জেগেছে এবার সারাদেশ, বৈষম্যহীন হবে বাংলাদেশ" এ প্রতিপাদ্যকের সামনে রেখে, তাবলীগ জামাতের উভয় পক্ষের মধ্যে বৈষম্য নিরসন ও চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধানের দাবিতে রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সচেতন ছাত্র সমাজ।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে এগারটায় রাজশাহী প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সচেতন ছাত্র সমাজের নেতৃবৃন্দ বলেন, তাবলীগ জামাত, যা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক এবং সারা বিশ্বে ইসলামের দাওয়াহ কার্যক্রমের অন্যতম মাধ্যম। আমরা লক্ষ্য করছি যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাবলীগ জামাতের অভ্যন্তরীণ বিভেদ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে যার ফলশ্রুতিতে প্রাণহানির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। যা দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি শৃঙ্খলার জন্য হুমকি স্বরূপ।
এই পরিস্থিতি শুধু তাবলীগ জামাতেরই ক্ষতি করছে না, বরং বৃহত্তর মুসলিম সমাজের ঐক্য ও সৌহার্দ্যকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি যে তাবলীগ জামাতের বিবদমান পক্ষদ্বয়ের মধ্যে এক পক্ষ চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তাই আজকে আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে সেই বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরতে চাই এবং এর সমাধানে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন বৈষম্যগুলো হল, প্রধান মুরুব্বিদের আগমনে বৈষম্য, কাকরাইল মসজিদ ব্যবহারে বৈষম্য, টঙ্গী ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণে বৈষম্য, ইজতেমার সময় বরাদ্দে বৈষম্য, মসজিদকেন্দ্রিক আমলে বাধা প্রদান ও বৈষম্য ও পাঁচ দিনের জোড় আয়োজনে বৈষম্য। এই বৈষম্য নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঊদ্যোগ গ্রহণ করেছে, আমরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সম্পূর্ণ বৈষম্য নিরসনে এই উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। আমরা চাই এই বৈষম্য বিরোধী সরকার তাবলীগ জামাতের বিবদমান উভয় পক্ষের মধ্যে ইনসাফ ও ন্যায় ভিত্তিক স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হবে।
সংবাদ সম্মেলনের ছাত্ররা সচেতন ছাত্র সমাজ" এর পক্ষ থেকে ইনসাফ ও ন্যায়ভিত্তিক স্থায়ী সমাধানের জন্য তিনটি প্রস্তাবনা পেশ করেন। প্রস্তাবনা গুলো হল
প্রস্তাবনা-১: উভয় পক্ষই যেন তাদের সর্বোচ্চ আমলা পরিচালনা করতে পারে তা নিশ্চিত করা।
প্রস্তাবানা-২: উভয় পক্ষের জন্যই কাকরাইল মসজিদ, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান এবং দেশের প্রতিটি মসজিদে তাবলীগের আমলে সমতা নিশ্চিত করা।
প্রস্তাবনা-৩: দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে উভয় পক্ষকে একে অপরের বিরুদ্ধে কোন ধরনের উস্কানীমূলক বক্তব্য এবং কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা এবং ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সমস্ত অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।
সংবাদ সম্মেলনে সচেতন ছাত্র সমাজের নেতার আরো বলেন অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে উপরোক্ত প্রস্তাব সমূহের আলোকে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গৃহীত না হলে; বিগত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের স্থগিতকৃত "প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি" দেশের সচেতন ছাত্র সমাজ এবং সচেতন নাগরিকদেরকে নিয়ে আরো জোরালো ভাবে পালন করতে বাধ্য হবে।
সচেতন ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শফিক আহমেদ, শিপন ইসলাম, তানজীম হাসান (রামেক), তারেক ইসলাম (রা.বি.), আবু বকর সিদ্দিক (অগ্রনী কলেজ), শাহরিয়ার হোসেন (রাজশাহী সিটি কলেজ)সহ অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ