গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতন না দেওয়া ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে কারখানার শ্রমিকরা। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের ওশিন স্পিনিং মিলস লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।
ঔই কারখানার শ্রমিক রাব্বি হাসান জানান, রাত ২টায় আমরা কাজ করছি। আমাদেরকে কয়েকজন পুলিশ এসে অফিস কক্ষে ডেকে নেয় এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় ,বলে বেতন-ভাতা নিয়ে আন্দোলন করলে সমস্যা হবে। এ সময় কয়েকজন পুলিশ এসে আমাদের ডেকে নেয়। এরপর আমাদের সাদা কাগজে সই স্বাক্ষর নেয়। এর প্রতিবাদ করলে কয়েকজনকে মারধর করে। আজ সকালে আবার পুলিশ এলে শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়। এ সময় বেতন-ভাতা চাইলে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। এরপর শ্রমিকেরা কারখানায় ভাঙচুর চালায়।’
নারী শ্রমিক লিজা আক্তার বলেন, ‘আমাদের বেতন-ভাতা না দিয়ে কারখানা বন্ধের পাঁয়তারা করছিল কর্তৃপক্ষ। আমরা বলেছি, আমাদের মে ও জুন মাসের বেতন পরিশোধ করে কারখানা বন্ধ করে দিলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে শ্রমিকদের মারধর করে পুলিশ। যে প্রতিবাদ করছে তাকেই পুলিশ আটক করছে।’
কারখানার অপর শ্রমিক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কারখানার শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের নায়ক মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা আবু হানিফ। তিনি প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের মারধর করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতেও পুলিশ এনে বিনা কারণে শ্রমিকদের মারধর করিয়েছেন তিনি।’
এ বিষয়ে কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা আবু হানিফ বলেন, ‘বেশির ভাগ শ্রমিকের মে মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি শ্রমিকদের বেতন রোববার দেওয়ার কথা দিয়েছি। কিন্তু শ্রমিকেরা তা না মেনে আজ শুক্রবার বেতনের দাবিতে কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। কারখানার কম্পিউটার, ল্যাপটপ, এসি, ভবনের গ্লাস, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। তাতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
তবে শ্রমিকদের মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে আবু হানিফ দাবি করেন, শ্রমিকদের মারধরের বিষয়টি সঠিক নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিল্প পুলিশের এএসপি (সার্কেল) মুন্সি আবদুল্লাহ শ্রমিকদের মারধরের বিষয়টি সঠিক নয় দাবি বলেন, কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে শ্রমিকেরা। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।