মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য ও পরিবহন খরচের কারণে বাড়ে সবজির দাম। আবার দীর্ঘ সময় ট্রাকে বস্তাবন্দি থাকায় মাঠ থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত আসতে আসতেই গুণ হারায় অনেক সবজি।
যানজটে পড়ে সবজি পচে যাওয়ার নজিরও অনেক। এসব ক্ষতি এড়াতে সরাসরি ট্রেনে সবজি পরিবহনের কথা উঠেছে কৃষকদের পক্ষ থেকে। সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে প্রস্তাব পেলে বিষয়টি নিয়ে এখানে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এমনটাই জানিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ।
জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের রাজশাহীব ও বগুড়া থেকে এক ট্রাক সবজি আনতে ট্রাকভাড়া গুনতে হয় ২৫-২৬ হাজার টাকা। রাস্তায় নানা গোষ্ঠীর চাঁদাবাজি তো আছেই। যার কারণে উত্তরাঞ্চলের ৮ টাকা কেজির সবজি রাজধানীবাসীকে কিনতে হয় ৮০ টাকায়। কৃষকরা জানিয়েছেন ট্রাকের পরিবর্তে ট্রেনে সবজি পরিবহন করার সুবিধা থাকলে তাদের লাভ হবে। কমবে মধ্যস্বত্বভোগী ও আড়তদারদের দৌরাত্ম্য। রাজধানীর বাসিন্দারাও পাবে কমমূল্যে তাজা সবজির স্বাদ।
কৃষকেরা বলছে, মৌসুমী আমের জন্য বিশেষ ‘ম্যাঙ্গো ট্রেন’-এর মতো ‘সবজি ট্রেন’-এর বিষয়ে ভাবতে পারে সরকার।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে যখন আম বাজারজাত করা যাচ্ছিল না। ছিল ট্রাকের সংকট ও অতিরিক্ত ভাড়া।তখন পর পর দুই বছর ধরে আমচাষিদের জন্য মৌসুমে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন’ চালু করে রেলকতৃপক্ষ। মৌসুম শেষ হলে গত ১৫ জুলাই থেকে ওই ট্রেন বন্ধ হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ওই ট্রেনে আম পরিবহন করে রেলওয়ের আয় হয়েছিল প্রায় সাড়ে ২৬ লাখ টাকা।
একইভাবে সবজি অধ্যুষিত এলাকাগুলো থেকে ট্রেনে সবজি পরিবহনের সুবিধা পাওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। তারা জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থা চালু হলে তারা নিজেরাই সরাসরি আড়তদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবজি পাঠাবেন।
রাজশাহীর কৃষক আমিনুল হক জানিয়েছেন, ট্রেনে সরাসরি সবজিসহ পাঠালে রাজধানীকে ৮ টাকার সবজি ৮০ টাকায় কিনতে হবে না। কৃষকরাও লোকসানে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হবে না। বগুড়া, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, দিনাজপুর, নওগাঁ ও নরসিংদী থেকে রাজধানীতে রেল যোগাযোগ রয়েছে। এসব স্থান থেকে সবজি ট্রেন চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা। তারা বলছেন, এতে রেল কর্তৃপক্ষের লাভও হবে।