ঢাকা, শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

২০ হাজার টাকা নির্ধারণ ও শ্রমিকদের সার্বজনীন রেশন-খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে-বগুড়ায় মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়

বগুড়া প্রতিনিধিঃ | প্রকাশের সময় : শনিবার ২২ অক্টোবর ২০২২ ০১:২৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

 ন্যূনতম জাতীয় মজুরী ২০হাজার টাকা নির্ধারণ ও শ্রমিকদের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, কর্মস্থলে নিরাপত্তাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য কমানো, মজুরী বোর্ড গঠন করে শ্রমিক-কর্মচারীদের বাজার দরের সাথে সংগতিপূর্ণ মজুরি নির্ধারণ, শ্রমজীবীদের সর্বজনীন রেশন, খাদ্য নিরাপত্তার মাধ্যমে শ্রমজীবীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অগণতান্ত্রিক শ্রম আইন ও বিধিমালা বাতিল করা, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রদান করার দাবিতে- সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসুচির অংশহিসাবে বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে শুক্রবার, বেলা সাড়ে ১১টায়, শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মিছিল ও সাতমাথায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সভাপতি শ্রমিক নেতা কমরেড সাইফুজ্জামান টুটুল। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সহ-সভাপতি শ্রমিক নেতা সুরেশ চন্দ্র দাস মনো, সাবেক সহ-সভাপতি শিব শংকর শিবু, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বর্মন, সাংগঠনিক সম্পাদক সানোয়ার বাবু, দপ্তর সম্পাদক আবু রায়হান সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কবি সুকুমার দাস প্রমূখ নেতৃবৃন্দ। 

 

সাইফুজ্জামান টুটুল বলেন, প্রতিষ্ঠানিক ও অপ্রতিষ্ঠনিক খাতে বাংলাদেশের শ্রমিকেরা শ্রম দিয়ে থাকে। দেশের লেবার ফোর্স সার্ভের হিসাব অনুযায়ী ৬ কোটি ৩৫ লক্ষ্য শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১ কোটির কম শ্রমিক প্রতিষ্ঠানিক খাতে শ্রম দেয়। বাকী ৫ কোটি ৩৫ লক্ষ্য অপ্রতিষ্ঠানিক খাতে। বগুড়ায় প্রাতিষ্ঠানিক শিল্প কলকার খানা বন্ধ হওয়ার পর শ্রমিকেরা বেশির ভাগই কাজ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। এই শ্রমিকদের মজুরি ,কর্মঘন্টা, নিয়োগ পত্র, আইডি কার্ড, চাকুরির নিশ্চয়তা কোন কিছুই সুনিদিষ্ট নয়। মালিক বা নিয়োগ কর্তার ইচ্ছা বা মর্জ্জির উপর শ্রমিকদের জীবিকা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। শ্রমিকেরা হাড়-ভাঙ্গা খাটুনি বিনিময়ে যা আয় করে তা স্থানীয় বাজারেই ব্যয় করেন এবং সরকারের কোষাগারে ভ্যাট দেয়। যে শ্রমিকেরা দেশের উৎপাদনের চাকা ঘোরায় তারা দিন-রাত হাড় ভাঙ্গা খাটুনির পরও সংসার চলে না। অথচ এই পুজিঁবাদী সমাজে মানুষকে বিবেচনা করা হয় টাকার মূল্যে, তাই কম মজুরির শ্রমিকদের মানুষ হিসাবে সম্মান-মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে দাঁড়াই, শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি দেয় না  বিগত ৫১ বছরের সরকারগুলি সব সময় মালিকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে শ্রমজীবীদের জীবনযাপন অসহায় করে তুলেছে। তাই তিনি যে সমাজ শ্রমিকদের মর্যাদা দেয় না সেই সমাজ পরিবর্তনের লড়াইয়ে শ্রমিকদের যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।

 

শ্যামল বর্মন বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকের জীবনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিশেষ করে চাল, ডাল, তেল এর মূল্যবৃদ্ধি, বাসা ভাড়া, গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি শ্রমজীবীদের সমস্যাগুলোকে প্রকট করে তুলেছে। আর শ্রমজীবী মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেলে তা অর্থনীতিতেও  বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি করে।  তাই শ্রমজীবী মানুষ এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশের স্বার্থেই নূন্যতম জাতীয় মজুরী ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ ও শ্রমিকদের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, কর্মস্থলে নিরাপত্তাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যে মূল্যে কমানো, মজুরী বোর্ড গঠন এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বাজার দরের সাথে সংগতিপূর্ণ মজুরি নির্ধারণ, শ্রমজীবীদের সর্বজনীন রেশন, খাদ্য নিরাপত্তার মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অগণতান্ত্রিক শ্রম আইন ও বিধিমালা বাতিল, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার আদায়ের আন্দোলন জোরদার করতে শ্রমজীবী মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে অন্যন্য নেতৃবৃন্দ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও যে ভাবে দফায় দফায় বাড়ছে। নিম্নআয়ের মানুষের জীবন-যাপন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক ভাবে বাজারে প্রতিনিয়ত নিত্যপন্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে শ্রমিকদের আয় না বাড়ায় এই শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। তাই শ্রমিকদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবার নুন্যতম চাহিদা পুরন করতে নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।