ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ঈদের আনন্দে যমুনায় বিনোদন প্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়

হাসান সিকদার, টাঙ্গাইল : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৪ জুলাই ২০২২ ০৬:৪১:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

যান্ত্রিক জীবনে কর্মব্যস্ততার ফাঁকে পরিবার-পরিজন ও প্রিয় মানুষকে সাথে নিয়ে ঈদুল আযহার আনন্দকে উপভোগ করতে মেতেছে বিনোদন প্রেমীরা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের দেশের দ্বিতীয় বৃহতম বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড়ে যমুনা নদীর তীরবর্তী গরিলাবাড়ী এলাকায় পাথরঘাটে গড়ে উঠেছে বিনোদন কেন্দ্র। যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু ও সদ্য নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু দেখতে ছুটে আসছেন টাঙ্গাইলসহ দেশের নানা প্রান্তের মানুষ। এই বিনোদন কেন্দ্রে সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত দেখা মেলায় প্রকৃতির পরিবেশ হয়ে ওঠে মনোরম।

শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু সেতু ছাড়াও রয়েছে আনন্দ পার্ক, বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট, জাদুঘর, শিশু পার্ক, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল, বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস কপি হাউজ ও বিপনীবিতান মার্কেট, সুইমিংপুল, হরিণ দেখার দৃশ্য, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব গোল চত্বর এবং ঔষধি গাছের বাগান। দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে নৌকা বা ছোট ট্রলার যোগে যমুনা নদী পথে সেতু দেখার ব্যবস্থা। এদিকে, ঈদকে কেন্দ্র করে পাথরঘাটে শতাধিক নৌকা সারিবদ্ধভাবে মাঝিরা সাজিয়ে রেখেছেন দর্শনার্থীদের জন্য। এখানে অসংখ্য কোমল, ফুসকাসহ নানা রকম দোকানপাট গড়ে উঠেছে।

ঈদের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দিন  বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ের পাথরঘাট এলাকায় দেখা যায় যমুনার পাড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে সূর্যাস্ত দেখছেন, কেউ তাদের পছন্দের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে আসেন। এখানে নৌকা বা ট্রলার দিয়ে ঘুরতে জনপ্রতি ৩০-৫০ টাকা দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুকে দেখছেন খুব কাছ থেকে। পাশেই নির্মাণাধীন রেল সেতুর কাজ দেখছেন। অনেকেই শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলনা কিনে দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ কেনাকাটাও করছেন। এতে করে বিকেলে ব্যাপক মানুষের উপচে পড়া ঢল নামে।

 

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ে ঘুরতে আসা মীম আক্তার, সামিয়া আক্তার বলেন, সারা বছর আমরা ব্যস্ত থাকি সংসার নিয়ে। ঈদের দিন অন্যদিনগুলো থেকে আমাদের কাছে বিশেষ একটি দিন। তাই ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে উপভোগ করতে নৌকাযোগে সেতু পূর্বপাড়ে আসছি। এখানে হাজার হাজার মানুষের দেখা যাচ্ছে। সত্যিই খুব ভাল লাগছে এখানে এসে। প্রতি উৎসবেই ঘুরতে আসব এখানে। তাছাড়া এই বিনোদন কেন্দ্র কম খরচে বিভিন্ন স্পটও ঘুরে দেখা যায়।

বাসাইল থেকে আসা জাকির হোসেন ও শুভ খান বলেন, করোনার কারণে গেল ৩ বছর কোন ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি পরিবার নিয়ে। এবার যেহেতু করোনার প্রকোপ কম, তাই ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘুরতে এসেছি। এই প্রথম বঙ্গবন্ধু সেতু সরাসরি দেখতে পেলাম। এখানে এসে খুব ভাল লাগছে। বাচ্চারাও অনেক আনন্দ উল্লাস করছে এখানে আসতে পেরে। এখানে প্রচুর মানুষ। যমুনার তীরে এই জায়গাটি যেহেতু বিনোদন বা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত লাভ পেয়েছে তাই সরকারের উচিত আরও উন্নত ব্যবস্থা করাসহ এদিকে নজর দেয়া। এতে করে আরও লোকজনের সমাগত হবে।

 

টাঙ্গাইলের ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বে দায়িত্বে থাকা প্রধান আতিকুর রহমান বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় গত ঈদের মতো এ ঈদেও বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ দর্শনার্থীসহ রাজনীতিবিদ দেশের বিশিষ্টদের নিরাপত্তার ব্যাপারে ট্যুরিস্ট পুলিশ সতর্ক রয়েছে। সে লক্ষ্যে আমাদের টুরিস্ট পুলিশ টিমের সদস্যরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর বা হয়রানিমূলক অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।