ঢাকা, রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
অনিরাপত্তায় পর্যটকরা

কক্সবাজারে বখাটে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি

এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, কক্সবাজার : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ ১০:৩১:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে  শহরের বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ছিনতাইকারী ও বখাটেদের দৌরাত্ম্য আশংকা জনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।  কতিপয় ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা বা টমটম চালক ও ছিনতাইকারীদের যোগসাজসে নানাভাবে অপরাধ কর্মকাণ্ড সংগঠিত হচ্ছে বলে  মনে করেন শহরবাসী।এ সব অপরাধের কারণে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি  ঘটছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ী মহল। সৈকতের বিস্তীর্ণ  এলাকায় আলোক সজ্জা না থাকায় অপরাধী ও মাদকাসক্তদের অভায়রণ্যে পরিনত হয়েছে  সৈকতের  ডায়াবেটিস পয়েন্ট থেকে লাবণী পর্যন্ত। গত এক মাসে ১১ টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে  পুলিশ শতাধিক বখাটে ছিনতাইকারী কে গ্রেফতার  করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ শেখ মনিরুল গীয়াস। তবে আরো অন্তত শতাধিক বখাটে ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসী ধরাছোঁয়ার বাইরে খেকে গেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
 
সর্বশেষ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে গত ১০ ডিসেম্বর  দুইজন পর্যটক আহত হয়েছে। ওই সময় ছিনতাইকারীরা পর্যটকদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল লুট করে নিয়ে যায়। 
 
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৮ টায় সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ওই ঘটনা ঘটে।
 যশোরের চৌগাছা এলাকা থেকে একদল পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন।
এ  দিকে দুই পর্যটক সমুদ্র সৈকতে  ঘুরে হোটেলে ফেরার পথে সুগন্ধা পয়েন্ট ও সীগাল হোটেলের মধ্যবর্তী স্থানে ঝাউবনের ভিতর ৪ জনের সশস্ত্র ছিনতাইকারী দল ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদের গতিরোধ করে। পর্যটকরা গতিরোধের কারণ জানতে চাওয়া মাত্রই তাদেরকে ছুকিকাঘাত করে নগদ ৭ হাজার টাকা ও দুটি দামী মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
 
আহত পর্যটক মো. পারভেজ জানান, ঘটনাস্থল থেকে অল্প দুরে সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য ও বীচ কর্মীরা ছিল কিছু বুঝে উঠার আগেই ছিনতাইকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করায় তাৎক্ষণিক ভাবে  তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি।অবশ্য পরে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।  
আহতরা কক্সবাজার   ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।
 
এব্যাপারে ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) মান্নানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছুরিকাহত মো. পারভেজ নামের এক পর্যটক শুক্রবার রাত ১০ টায় ছিনতাইয়ের বিষয়ে লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা তা তদন্ত করছি। 
 
 
 কক্সবাজার ট্যুরিষ্ট পুলিশের এএসপি মহি উদ্দীন এ প্রতিবেদককে জানান,ভোর বেলায় যখন পর্যটকরা গাড়ি থেকে নেমে হোটেল মোটেলের দিকে যায় সুযোগ বুঝে তখনই বখাটে ছিনতাইকারীরা টার্গেট করে পর্যটকদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।আবার কখনো কখনো সুর্যাস্তের পর অন্ধকার নেমে আসলে সমুদ্র সৈকতে দেশী বিদেশী পর্যটকেরা  বখাটে মাদকাসক্ত ছিনতাইকারীদের টার্গেটে পরিনত হয়।  এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য ট্যুরিষ্ট পুলিশের শক্তিশালী ৪ টি টীম কাজ করছেন।প্রতিটি টীমে একজন এস আই দুই জন এ এস আই সহ ২০ জন পুলিশ বীচ ও পার্শ্ববর্তী পর্যটন এলাকায় পালাক্রমে পর্যটকদের  নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।  তারপরও পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে  ও ছোট খাট কিছু অপরাধ ঘটতেই পারে।উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু হয়নি। 
 
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি মোঃ মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের নিরাপত্তায়  ট্যুরিষ্ট পুলিশ অত্যান্ত আন্তরিকতার কাজ করছেন। বীচের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যেখানে যেখানে আলো সল্পতা রয়েছে সে সব স্থান চিহ্ণিত করা আছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে আলোকিত করা হবে।যাতে অপরাধীরা বীচ এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে না পারে।কারণ বখাটে ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসীর কারণে কক্সবাজার পর্যটন শিল্পের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করতে দেয়া যাবে না।কঠোর নজরদারি বা সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো পর্যটন জোন কে নিরাপত্তার চাদরে  ডেকে রাখার পরিকল্পনা নিয়ে  এগিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের।দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সবচেয়ে নিরাপদ  আবাসস্থল হবে কক্সবাজার।