সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার চতুল বাজারে মিশুক চালকের সাথে খারাপ আচরণের জের ধরে হামলায় জয়নাল আবেদীন (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় চতুল বাজারের লালাখাল রোডের কামারহাটিতে।
নিহত জয়নাল আবেদীন বড়চতুল ইউনিয়নের হারাতৈল উত্তর (উপর বড়াই) গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে বাজারের ব্যবসায়ী আবুল আহমদ (৩০) কে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত পুলিশ সেখান থেকে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শী, বাজারের ব্যবসায়ী ও নিহতের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিহত জয়নাল আবেদীনের পুত্র মিশুক চালক সায়েম আহমদ (১৫) একই গ্রামের জিয়াউল হকের পুত্র আবুল আহমদকে মিশুকে নিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চতুলবাজার কামারহাটির হৃদয় আর্ট এন্ড কসমেটিক্স দোকানে আসার সময় মিশুক চালক সায়েমের পাশে বসে আবুল আহমদ তার সাথে খারাপ উদ্দেশ্যে অশ্লীল আচরণ করে। দোকানের সামনে আসার পর আবুল আহমদ ১০টাকা ভাড়ার স্থলে মিশুক চালক সায়েমকে ৫’শ টাকার নোট দিলে সে ভাংতি নেই জানালে আবুল আহমদ তাকে গালাগালি করে। পরে সায়েম আহমদ তার পিতা জয়নাল আবেদীনকে চতুল বাজারে বিষয়টি অবগত করে। জয়নাল আবেদীন আবুল হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে ছেলের সাথে খারাপ আচরণের বিষয়টি জানতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে আবুল হোসেন ও তার সাথে থাকা দু’জন এবং জয়নাল আবেদীন ও তার ছেলে সায়েম দেশীয় অস্ত্র, লাটি-সোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে মাথায় গুরুতর জখম হয় জয়নাল আবেদীনের। সংঘর্ষে আবুল হোসেনও আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কজেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৬ টার দিকে মারা যান গুরুতর আহত জয়নাল আবেদীন।
নিহত জয়নাল আবেদীনের সালমান আহমদসহ পরিবারের সদস্যরা জানান, সায়েম আহমদকে ব্যবসায়ী আবুল আহমদ কু-প্রস্তাব দিয়ে যৌন নীপিড়ন করে। এর প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিত ভাবে আবুল আহমদ ও তার সাথে থাকা আরো কয়েকজন মিলে তার প্রতিষ্ঠানের সামনে জয়নাল আবেদীনকে কাঠের রুল ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি মারা যান।
ঘটনার খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি আব্দুল করিম, থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে থানার ওসি তাজুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনার সাথে জড়িত আবুল আহমদকে ওসমানী মেডিকেলে দায়িত্বরত পুলিশ আটক করেছে। ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে সেই আলোকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। লাশ ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে, মঙ্গলবার ময়না তদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।