ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে দুদকের হানা

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : সোমবার ১ জুলাই ২০২৪ ০৪:০৫:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

প্রায় তিন বছর আগে অবৈধ প্রক্রিয়ায় আমদানি করা ব্রাহমা জাতের জব্দকৃত ১৫টি গরুর বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধানে সাভারের গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

 

সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সাভারে কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অনুসন্ধান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নয় সদস্যের একটি দল।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত রমজান মাস উপলক্ষে সুলভ মূল্যের মাংস বিক্রির জন্য অবৈধ প্রক্রিয়ায় আমদানি করা জব্দকৃত ব্রাহমা জাতের গরুর মাংস বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে নিলামে উচ্চ বংশীয় গরু বলে বিক্রির জন্য নিয়ে যান সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান। নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের গরুগুলো তিন বছর আগে সাদিক অ্যাগ্রোর নামে আমদানি করা হয়েছিল। সেগুলো জব্দ হওয়ার পরও সাদিক অ্যাগ্রো আবার ব্রাহমা জাতের গরু বিক্রি করলেন কীভাবে এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অভিযান পরিচালনা করে দুদক।

 

অভিযোগ রয়েছে কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে জব্দ থাকা গরুগুলো দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দায়িত্ব নেন সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান। গরুগুলো জবাই করে রমজানে ২৮০ টাকা মূল্যে মাংস বিক্রি করার শর্তে ইমরানকে দেওয়া হয়েছিল। তবে ইমরান সুলভ মূল্যে বিক্রি না করেই গরুগুলো তার খামারে রেখে দেন। এছাড়াও নিষিদ্ধ ব্রাহমা গরু কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার থেকে সংগ্রহ করে কোটি টাকা দাম হাঁকিয়ে বাজারে তোলে বলে অভিযোগ ওঠে।

 

এ ব্যাপারে দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ২০২১ সালে অবৈধভাবে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি হয়। সেগুলো এতদিন পরিচর্যার জন্য কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে রাখা হয়। তবে গত এপ্রিলে রমজান মাসে কয়েকটি শর্ত দিয়ে গরু জবাই করে বিক্রির জন্য সাদিক অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ইমরান হোসেন দায়িত্ব নেন। কিন্তু কোরবানি ঈদে একই রকমের গরু বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়া গরুগুলো তিনি জবাই না করে প্রদর্শন করে বিক্রি করা হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখতে এ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। সাদিক অ্যাগ্রোর সঙ্গে এখানকার কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

গত ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ব্রাহমা জাতের ১৮টি গরু জব্দ করে ঢাকা কাস্টম হাউস। এর মধ্যে তিনটি গরু মারা যায়। বাকি ১৫টি গরু লালন-পালনের জন্য দায়িত্ব পায় কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার। কিন্তু ২০২৩ ও ২০২৪ সালের প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীতে প্রকাশ্যে ইমরান এ ব্রাহমা জাতের নিষিদ্ধ গরু উঠিয়েছিলেন।

 

এর আগে ২০২১ সালে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়ে। ওই গরুগুলো আমদানি করে সাদিক অ্যাগ্রো নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তবে গরুগুলো বাজেয়াপ্ত করে সরকার। সেগুলো রাখা হয় সাভারের সরকারি ডেইরি ফার্মে। সেখানে তিনটি গরু বিভিন্ন সময়ে মারা যায়। বাকি ১৫টি গরু জবাই করে মাংস বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া হয়।