ঢাকা, শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১লা অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জৈন্তাপুরে টিলা ধসে নিহত চারজনের দাফন সম্পন্ন

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : সোমবার ৬ জুন ২০২২ ০৭:১২:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সাতজনি গ্রামে টিলা ধসে মাটিচাপায় নিহত ৪ জনের জানাজার নামাজ ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার বিকাল ৩টায় চিকনাগুল শাহী ঈদগাহ মাঠে জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

টিলা ধসের ঘটনায় মাওলানা রফিক আহমদের ইমামতিতে নামাজে জানাজা শেষে নিহতদের লাশ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানাজায় অংশ নেন হরিপুর মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল কাদির, মাওলানা হিলাল আহমদ, উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, ভাইস চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন, জেলা পরিষদের সদস্য সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুহিবুল হক মুহিব, চিকনাগুল ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, দরবস্ত ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিক আহমদ সহ চিকনাগুল-হরিপুর ইউপির বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্রসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মুসল্লিরা।  

এর আগে সোমবার ভোরে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় পাহাড় ধসে মাটিচাপায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে এক শিশুও রয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮ জন। সোমবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের পূর্ব সাতজনি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- পূর্ব সাতজনি গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে জুবায়ের আহমদ (৩৫), তার স্ত্রী মোছা. সুমি বেগম (২৬), জুবায়ের আহমদের ছেলে সাফি আহমদ (৫) এবং জুবায়ের আহমদের ভাই মাওলানা রফিক আহমদের স্ত্রী মোছা. শামীমআরা বেগম (৪৮)।

স্থানীয় ও থানাপুলিশ সূত্র জানায়, সাতজনি গ্রামে পাহাড় কেটে অনেকেই বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন। এর মধ্যে ওই পরিবারও পাহাড় কেটে পাদদেশে বাড়ি তৈরি করে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে পড়ে। রোববার রাতেও সিলেটে বৃষ্টি হয়। আর সোমবার ভোরর ৫টার দিকে পূর্ব সাতজনি গ্রামের জুবের আহমদের টিনের তৈরিঘরের উপর পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে। এসময় ঘুমন্ত অবস্থায়ই মাটিচাপা পড়ে একই পরিবারের ওই চারজন নিহত হন।

এ ঘটনায় আহত হন ৮ জন। তারা হলেন- আব্দুল করিম (৮০), খয়রুন নেছা (৭৫),  মাওলানা রফিক আহমদ (৬০), ফাইজা বেগম (২০), লুৎফা বেগম (২০), রাফিউল ইসলাম (১০), মেহেরুন নেছা (৪০) ও হাম্মাদ (৩)। আহতদের পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া দেওয়া হয় এবং গ্রামের বাসিন্দারা দ্রুত ছুটে এসে হতাহতদের উদ্ধারকাজ শুরু করেন। অপরদিকে ঘটনার সংবাদ পেয়ে সিলেট ফায়ার সার্ভিস উপ পরিচালক মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে জালালাবাদ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সদস্য ও জৈন্তাপুর থানাপুলিশের টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। পরে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সিলেট ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে দ্রুত দুটি ইউনিট নিয়ে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করি। ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৮ জন আহত হয়েছেন।

জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম দস্তগির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ৫ জনকে আহত অবস্থায় এবং ৪ জনকে মৃত উদ্ধার করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে ময়না তদন্ত ছাড়া বিকাল ৩টার দিকে স্থানীয় চিকনাগুল শাহী ঈদগাহ ময়দানে জানাযার নামাজ শেষে নিহতদের লাশ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে, তাৎক্ষণিকভাবে নিহদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও শুকনো খাবার প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিলেট অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান। এসময় তিনি হতাহতদের দাফন ও চিকিৎসার জন্য মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন।