পাহাড়ি ঢল ও তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। বুধবার ১৯ জুন ২০২৪ ইং, সকালে জেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে জেলার মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ী—এই চারটি নদ-নদীর চারটি স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা যায়, ঈদের দিন ভোররাত থেকেই জেলাজুড়ে শুরু হওয়া ভারি বর্ষণ এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। পাহাড়ি ঢল ও তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে জেলার ৭ উপজেলার ৫ পৌরসভাসহ ৩৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর এলাকা, রাজনগর ও সদর কুশিয়ারি নদীর পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় ভারি বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত জেলাজুড়ে ৪৩২টি গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রাম ও এলাকার ১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯০ জন মানুষ বন্যা আক্রান্ত। এছাড়া ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়গুলোতে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া বন্যার্তদের জন্য ত্রাণও প্রস্তুত রয়েছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল বলেন, জেলার সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। এর মধ্যে কুলাউড়া, রাজনগর, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার ৫৭১টি পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।