মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী আলীনগর বিন্দারানী দিঘিরপাড় বাজারের শেডঘর উন্নয়নের কাজ থমকে রয়েছে তিন বছর ধরে। গ্রামীণ বাজার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে শুরু হওয়া প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিন্দারানী দিঘিরপাড় বাজার শেডঘর উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ বছরখানেক আগে শেষ হলেও তার কোনো অগ্রগতি নেই। নির্ধারিত মেয়াদের ২ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর কেটেছে আরও একটি বছর। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃক সরকারি এ বাজারটি উন্নয়নের জন্য ২০২০ সালের অক্টোবরে ওয়ার্ক অর্ডার পেয়ে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সেলিম কনস্ট্রাকশন। এক বছরের মধ্যে পাইলিংয়ের কাজ সমাপ্ত করা হয়। ২০২২ সালে নাকশায় ভুল ও জেলা প্রশাসকের এনওসি না নিয়ে কাজ করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চলমান কাজের প্রথম ধাপের বিল পরিশোধ করেনি এলজিইডি। এতে বছরখানেক আগে প্রকল্প ফেলে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদিকে প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল শেষ হলেও বর্তমানে বাজারের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন না পাওয়ায় আর্থিক সংকটে রয়েছেন। এলাকার বাসিন্দা ফয়জুল ইসলাম, মখলিছ মিয়াসহ অনেকেই বলেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দ্বারা বাজারটি নিয়মিত পরিচালিত হতো। বাজারের উন্নয়ন কাজের আওতায় তাদের দোকানপাট চলে যাওয়ায় বর্তমানে ব্যবসায়ীরা বঞ্চিত রয়েছেন। এতে স্থানীয় বড় একটি জনগোষ্ঠী বেকার হয়ে পড়েছে। সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী। এ ছাড়া সাধারণ ভোক্তারাও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আবদুল লতিফ জানান, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জরাজীর্ণ এ বাজারের শেডঘরটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে এক বছর অতিবাহিত হলেও কাজের কোনো অগ্রগতি না থাকায় সবাই হতাশ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সেলিম কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী সেলিম মিয়া জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাজার উন্নয়নের জন্য এনওসি না নিয়ে কাজ করিয়েছে। প্রকল্পের কাজে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় হলেও তিন বছরে একটি বিলও দেয়নি। নকশায় ভুল থাকলে সে দায় এলজিইডির। প্রকল্পের নতুন নকশার কপি না পাওয়ায় বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। এলজিইডির কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম জানান, নকশায় কিছুটা পরিবর্তন এনে পুনরায় কাজ শুরু হবে।