নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলায় আগাম সেভেন জাতের আলু রোপন করে মড়ক রোগে পচন ধরেছে। এ অঞ্চলের জমিগুলো একদম উঁচু বেলে-দোআঁশ মাটি হওয়ায় প্রতিবছর আগাম আলু চাষ হয়ে থাকে। এবার গতবছরের চেয়ে বীজের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় আলু রোপন ব্যয় বেশি হয়েছে বলেও জানা যায়। তবে লাভের আশায় বেশি খরচে আগাম আলু রোপন করে মড়ক রোগে পচন ধরায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
কৃষকরা জানান, এ উপজেলায় মুক্তা হিমাগার নামে একটি আলু সংরক্ষণাগার থাকায় সেখানে আলুর বীজ সংরক্ষণ করে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারনে বীজে কিছুটা পচন ধরে। পরে বীজের দাম বেশি হওয়ায় কৃষক নিরুপায় হয়ে সংরক্ষণ করা বীজ নিয়ে এসে জমিতে রোপন করেন। বীজ আলু রোপনের কিছুদিন পরে আলুতে দ্রুত মড়ক রোগ ধরে পচন ধরে গাছ মারা যাওয়া শুরু হয়। পরে কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে স্প্রে ও কীটনাশক ব্যবহার করেও তা কাজে আসছে না।
খোলাহাটি এলাকার কৃষক সুরুজ মিয়া বলেন, আমি মুক্তা হিমাগারে ৩ বিগা জমিতে রোপন করার জন্য আলু সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম। তারপর যখন সেখান থেকে আলুর বীজ বের করি তখনেই আলুর বীজে হালকা পচন ধরেছিলো। তারপর হিমাগার কতৃপক্ষকে জানালে তারা কিছুই বলেনি। আমি সেগুলো নিয়ে এসে জমিতে রোপন করলে ১৫-২০ দিন পরে দ্রুত মড়ক রোগে আলুর গাছগুলো মারা যাওয়া শুরু হয় তারপরে মাটি খুড়ে দেখি আলুর বীজ ভিতরে সব পঁচে গেছে।
তিনি আরও বলেন, লাভের আশায় প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে আগাম আলু রোপন করেছি। আলুতে পচন ধরায় আমার সব টাকা লস হয়ে গেলো। কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে স্প্রে করলেও তা কাজে আসছে না। এখন এমন মূহুর্তে আর্থিক সমস্যার কারনে নতুন করে আলুও রোপন করতে পারছি না।
এবিষয়ে আলু সংরক্ষণাগার মুক্তা হিমাগারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, সেখানে কৃষকেরা আগাম সেভেন জাতের আলু রোপন করেন এবং হিমাগারে তাদের বেশি আলুর বীজ থাকে। এবিষয়ে কেউ অভিযোগ করতে পারে- আমার হিমাগারে কোন অব্যবস্থাপনা নেই।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, এ উপজেলায় বছরের পর বছর একই জমিতে কৃষকেরা একই বীজ চাষ করার কারনে আলুতে মড়ক রোগ দেখা দিয়ে পচন দেখা দিচ্ছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করছি, পরামর্শ দিচ্ছি। তাতে কাজ হচ্ছে তবে কাজ হওয়ার মাত্রাটা একটু কম। এটা মূলত বীজবাহিত রোগ এটা থেকে বাঁচার জন্য বীজটাকে ভালো করে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
আলুর বীজ হিমাগারে রাখতে অব্যবস্থাপনা থাকলে দ্রুত মড়ক রোগে ১৫-২০ দিনের মধ্যে আলুর পচন দেখা দিবে। এবছর ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম আলু ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর। তবে কিছু কৃষকের আলুতে পচন ধরায় লক্ষমাত্রা একটু কম হতে পারে।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে