ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ছোটনের নির্বাচনী প্রচারনাকালে তার গাড়ীতে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীকের) প্রার্থী মোঃ সরোয়ার্দীর সমর্থকরা গুলিবর্ষণ করেছে ও নৌকার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী ( আনারস) প্রতীকের সমর্থকেরা এমন পাল্টা পাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ছোটন বলেন, সরোয়ার্দ্দীর সমর্থকরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। আমি নিরাপত্তার জন্য ইলিশা পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেই। অপরদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ সরোয়ার্দীর নির্বাচনী অফিস, শেখ মুজিব ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের পাল্টা অভিযোগ করেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ছোটনের বিরুদ্ধে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকাল ও সন্ধ্যায় পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের মডেল কলেজ সংলগ্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারনা চলাকালীন সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ছোটনের উপর গুলিবর্ষণ ও ইলিশা গোডাউন সংলগ্ন নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ওই এলাকায় সড়ক অবরোধ করে ঝাড়ু মিছিলসহ বিক্ষোভ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর নারী সমর্থকরা। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আনেয়ার হোসেন ছোটন নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ সুপারের বরাবর আবেদন করেন।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ছোটন বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা আমার কর্মীদের উপর নানা হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। গত ৫ দিন আগেও আমার প্রচারনাকালে আমার স্ত্রী ও ভাইর উপর হামলা করেন। তার পর থেকে আমি প্রচারনা বন্ধ রাখি। এই সুযোগে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে রাতে বোমের শব্দে ঘুমানো যায় না। তারা যেখানেই আমার কর্মীদের দেখে সেখানেই হামলা করে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসের আয়োজনে এক আইনশৃঙ্খলা মিটিং-এ আমি দাবি তুলে বলেছি পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার জন্য। ডিসি ও এসপি মহোদয় আমাকে আশ্বস্থ করেছেন। তাদের ভরসায় ৫দিন পরে আমার দুইটি গাড়ি নিয়ে প্রচারনার উদ্দেশ্য ইউনিয়নের জংশন বাজারের দিকে রওনা দেই। বাজারে আগেই মাঝ রাস্তা নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য গাড়িতে গুলিবর্ষণ করে। এ সময় আমার একটি গাড়ির পিছনের গ্লাস ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাৎক্ষনিক আমি নিরাপত্তার জন্য ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে আশ্রয় নেই। পুলিশের সহযোগীতায় আমি রক্ষা পাই।
এসময় তিনি নৌকার ক্লাব ভাংচুরের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, আমার উপর গুলিবর্ষনের বিষয়কে ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্য নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ভাই মোসলেউদ্দিন তার বাড়ির সামনে তাদের নির্বাচনী কার্য়ালয় ভাংচুর করে আমার উপর অভিযোগ দিচ্ছেন।
এদিকে নৌকা মনোনীত প্রার্থী মোঃ সরোয়ার্দী বলেন, আমি আজ সন্ধ্যার ৩নং ওয়ার্ডে এক উঠান বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেনাম। এসময় তাঁর বাড়ির সামনের সড়ক দিয়ে যাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ছোটনের গাড়িবহর থেকে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় তাঁর লোকজন ছোটনের গাড়িবহর ধাওয়া করলে ছোটন গাড়ি নিয়ে ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। এসময় ছোটনের কর্মী-সমর্থকরা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে তাঁর একটি নির্বাচনী ক্লাব ভাংচুর করে। হামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভোলা-১ আসনের সাংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের ছবি ভাংচুর করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুর্ব ইলিশা ইউনিয়নে শান্তি পুর্ন ভাবে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা চালিয়ে আসছিল প্রার্থীরা। কিন্তুু জনসমর্থনে পিছিয়ে পড়া সরোয়ার্দীর বাহিনীরা হামলা নির্যাতন করে ইউনিয়নের পরিবেশ নষ্ট ও আইন শৃংঙ্খলার অবর্নতি করছে। দুই গ্রুপের এই ঘটনার পর ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, পূর্ব ইলিশায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এমন সংবাদ পেয়ে ডিবি পুলিশ, জেলা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় কোন পক্ষের লিখিত অভিযোগ পাওয়ায় যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।