ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাজারে নিত্য পণ্যের দাম তিনগুণ, কেমন চলছে মানুষের জীবনযাত্রা?

মোঃ রেজাউল করিম মজুমদার, গাজীপুর | প্রকাশের সময় : শনিবার ১৬ মার্চ ২০২৪ ০১:৫২:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

প্রতিবছরের মতো এবারও পবিত্র রমজান মাস আসার আগেই সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বাজারের নিত্য পণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকার কথা থাকলেও নেই উর্ধ্বগতির দামের নিয়ন্ত্রণ।

 

ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগ পেলে সাথে সাথে অভিযান পরিচালনা করার আগেই অল্প সময়ের জন্য দাম নিয়ন্ত্রণে রাখলেও পরবর্তী সময় নিয়ন্ত্রণের বাহিরে বিক্রি হচ্ছে নিত্য পণ্যের জিনিস।

 

বাজার ঘিরে মনিটরিং থাকার শর্তেও নেই কোনো বাজার কমিটির ব্যবস্থা।

 

সরেজমিনে মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতাদের নাগালের বাহিরে দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারা। রোজার আগে যে রুই মাছের দাম ছিলো ৩৫০ টাকা সেই একই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি ধরে এবং যে তেলাপিয়া মাছ রোজার আগে ছিলো ২৫০ টাকা সেই একই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি ধরে। 

 

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রোজার আগে ৬০০ টাকা কেজি ধরে গরুর মাংস বিক্রি করার কথা থাকলেও বিক্রেতারা বিক্রি করছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি ধরে। খাসির মাংসের কেজি ১১০০ থেকে বেড়ে ১২০০ টাকা হয়েছে। 

 

ক্রেতারা মনে করছেন সরকারি নির্দেশনা কখনোই আমলে নেন না বিক্রেতারা।

 

রোজার আগে যে বয়লার মুরগি ছিলো ১৬০ টাকা কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি ধরে। সোনালি মুরগি ছিলো ৩২০ টাকা কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকা কেজি ধরে। দেশি মুরগির দাম ৬৫০ থেকে বেড়ে ৭০০ হয়েছে। ডিমের হালি প্রতিও বেড়েছে কয়েক টাকা। 

 

নিত্য পণ্যের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়েছে মানুষের ভোগান্তি কারণ, চাল, ডাল, তেল, ডিম থেকে শুরু করে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। চাউলের বস্তা প্রতি বেড়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। মানুষের আয় এক গুণ বাড়লেও জিনিসের দাম বেড়েছে তিনগুণ, নেই কোনো প্রকাশ স্বস্তি।

 

বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন আকারের বড় বড় সিন্ডিকেটের জন্য প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়েই চলছে। ব্যবসায়ীদের কিনতে হচ্ছে বেশি দামে বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। বিক্রেতারা আরো জানান, বাংলাদেশে কোনো একটা জিনিসের দাম একবার বেড়ে গেলে পরবর্তী সময় ওই জিনিসটার দাম কমে যায় এটা আমাদের জানা নেই।

 

ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজারে গিয়ে কেনাকাটা করলে বুঝা যায়, আয়ের তুলনায় ব্যয়ের সংখ্যা অনেক বেশি। টাকার মান কমে যাওয়ায় বাজারে পণ্যের দাম লাগামহীন, সীমিত আয়ের মানুষ পড়েছেন বিপাকে।

 

দিনমজুরি রিকশাচালক আকবরের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়েক বছর আগে আমার আয় কম ছিলো কিন্তুু আমি প্রতি সপ্তায় একবার করে হলেও গরুর মাংস খেতে পারতাম পরিবারের সবাইকে নিয়ে, এখন বর্তমানে আমার আয় বেড়েছে কিন্তুু প্রতিমাসে একবার গরুর মাংস খেতে আমি হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি তবুও খেতে পাচ্ছি না। কারণ কয়েক বছরের ব্যবধানে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার গরুর মাংস হয়েছে ৮০০ টাকা কেজি। কীভাবে চলবে আমাদের সংসার জীবন? 

 

তবে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের দাবি সরকার চাইলে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ মোতাবেক অনুযায়ী যদি বড় বড় সিন্ডিকেটগুলো ভেঙে আইনের আওতায় আনা হলে। তবেই বাজারের সার্বিক নিত্য পণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকবে বলে মনে করছেন সবাই।