বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমরাও সংস্কার চাই, এ জন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। কিন্তু এই যে তারা (বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি) যেটা দিতে চায়, সেটা আমাদের না দিলেও আমরা তা কোনো না কোনোভাবে পেয়েছি। সেখানে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এদের ঘাড়ে চাপছে ৭১ এ যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে তারা। আকারে ইঙ্গিতে তারা বলতে চায় ৫ আগস্ট (২০২৪ সাল) দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাহলে ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গরু ছাগল রক্ত দিয়েছে, নাকি মানুষ রক্ত দিয়েছে? ৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে তাদের ছবক শুনতে জাতি রাজি না।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা বিএনপির উদ্যোগে কর্মীসভা ও সদস্য ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও ৭ নভেম্বরের পরাজিত শক্তি মিলে যারা জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন, তাদের রুখে দেওয়ার ক্ষমতা এদেশের জনগণ রাখে। সেই নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য নেতৃত্বও আছে। জিয়াউর রহমান হারিয়ে গেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া সেই জায়গা থেকে শুরু করেছেন। সেখান থেকেও নেতৃত্ব চলে এসেছেন তাদের যোগ্যউত্তরসূরী তারেক রহমান।
গত ১৬ বছর যাবৎ বিএনপি আন্দোলন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্রদের কোটাবিরোধী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮ দফার মধ্যে সরকার পতনের দাবি ছিল না। তারা যখন এই আন্দোলনে নামছে আমরা পরদিন তাতে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছি, আমি একজন সাক্ষী। ছাত্ররা আন্দোলনে নামার পরপরই আমি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে একটি মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠালাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি আমার মোবাইলে ফোনে কল করলেন। বললেন, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে সবাইকে ডেকে বসি। বিকাল চারটার দিকে কথা, ছয়টায় জরুরী দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকলেন তিনি। সেই বৈঠক থেকে ছাত্রদের আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানানো হলো। এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সক্রিয় হয়ে উঠলেন। টেলিফোনে তিনি সবার সাথে যোগাযোগ শুরু করলেন। আমাকে বললেন, শুধু নৈতিক সমর্থন যথেষ্ট না, সবাইকে সক্রিয় করতে হবে। আমি বললাম অবশ্যই সক্রিয় করতে হবে। তবে, দলীয় ব্যানার ছাড়া আমরা সবাই এই আন্দোলনে অংশগ্রহন করব। আমাদের ছাত্র-যুবক নেতাকর্মীরা মাঠে নেমে পড়ল। হাসিনা কিন্তু বার বার বলছে এটা বিএনপির ষড়যন্ত্র।
তিনি আরো বলেন, এরপর আমরা সর্বাত্মক সমর্থন জানালাম। আমরা বিএনপির পোশাক ছেড়ে হয়ে গেলাম ছাত্র-জনতা হয়ে। এই আন্দোলনে শুধুমাত্র ছাত্রের বাবা-ই নামেনি, দেশের সব মানুষ নেমেছিল। এদেরকে কে নামিয়েছিল, এই বিএনপি-ই নামিয়েছিল।
গয়েশ্বর রায় বলেন, আমরা ছাত্রদের অভিনন্দন জানাই। এখনও অভিনন্দন জানাই। তবে ১৫ দিনের পূজিঁ দিয়ে রাস্তায় বেশিদিন হাটা যায় না। ১৬ বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি। প্রত্যেকটা রক্তের মূল্য আছে- যে সর্বশেষ রক্ত দিয়েছে তারও আছে, যে সবার আগে দিয়েছে তারও আছে।
বায়ান্ন/আরএইচ/একে