বিএনপি নেতা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর উপর নানান কারণে সিলেট নগরবাসী ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরগরম হয়ে উঠেছে। নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে বহিরাগত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মেয়র আরিফ। মেয়র আরিফের ওই বক্তব্যকে নানানভাবে কটাক্ষ করছেন নগরবাসী।
সিলেট জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক তাঁর ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। আক্রমণ করেছেন মেয়র আরিফুল চৌধুরী। এজাজুল হক ওই স্ট্যাটাসে নানান বিষয়ের জবাব চেয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে। ওই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তুমুল হৈচৈ চলছে। ফেইসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসটি দৈনিক বায়ান্নতে তুলে ধরা হলো।
'সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র মহোদয় আরিফুল হক সাহেবের সাম্প্রতিককালের কিছু বক্তব্য আমাদের সিলেটের মানুষকে তথা সারা বিশ্বে বসবাসরত সিলেটবাসীকে হতাশ করেছে।
আরিফুল হক সাহেবের দল ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে তারা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না এবং ইভিএম পদ্ধতি তারা মানে না। কিন্তু আরিফুল হক সাহেব নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন, উনাকে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করছি আপনি আপনার দলকে নিয়ে আপনার দলীয় প্রতীক ধানের শীষ মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন।
আমরা সকলেই জানি নির্বাচনে জয় পরাজয় আছে। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী পরিষ্কারভাবে বলেছেন নির্বাচন একটি প্রতিযোগিতা, এখানে হার-জিত থাকবেই। জনগণ যাকে ভোট দিবে সেই সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হবেন। জুজুর ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। চতুরতার আশ্রয় নিয়ে এইবার নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারবেন না। আপনি দুই বারের মেয়র ছিলেন। আপনাকে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে জবাব দিতে হবে বিগত ১০ টি বৎসর আপনি সিলেট নগরীর উন্নয়নের জন্য কত টাকা ব্যয় করেছেন। নগরীর জলাবদ্ধতা সহ কি কি অবকাঠামো গত উন্নয়ন করেছেন।
আমি যতটুকু জানি এই ১০ বৎসর আপনি সিলেট নগরীর উন্নয়নের জন্য সরকার থেকে অর্থাৎ মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। পাশাপাশি সিলেট নগরীর মানুষের উপর হোল্ডিং ট্যাক্স, পানির বিল, ট্রেড লাইসেন্স ফি, ব্যবসায়িক সাইনবোর্ড স্থাপনের ফি অনেক গুণ বৃদ্ধি করে আরো কয়েকশত কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় করেছেন। এটা জনগনের ট্যাক্সের টাকা। এই টাকা কোন খাতে কিভাবে ব্যয় করেছেন জনগণের কাছে তার হিসাব দিতে হবে। এটা সিলেট নগরবাসীর অধিকার। কিন্তু আপনি এই বিষয়কে পাশ কাটানোর জন্য চতুরতার আশ্রয় নিয়ে সিলেটের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির নগরী সিলেট কে অশান্ত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন। আপনি মে দিবসের এক শ্রমিক পথসভায় বলেছেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বহিরাগত। আমি পাল্টা কোন প্রশ্ন রাখতে চাই না। তবে আপনার দৃষ্টিতে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যদি বহিরাগত হয়ে থাকেন তাহলে এই সিলেট নগরীতে বসবাসরত সিলেট জেলার অন্তর্গত সকল উপজেলার মানুষ যারা বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনের ভোটার এবং সম্মানিত নাগরিক, তারা সবাই কি আপনার দৃষ্টিতে বহিরাগত। এই বিষয়ে অবিলম্বে আপনি আপনার বক্তব্য পরিষ্কার করবেন বলে আমি আশা রাখি। আর আপনি বর্তমান মেয়র হিসাবে এই সিলেট নগরীতে বসবাসরত নাগরিক বৃন্দের মধ্যে কারা বহিরাগত আর কারা স্থায়ী এই বিষয়টি পরিষ্কার করবেন। কারণ পহেলা মে শ্রমিক পথ সভায় আপনার এই বক্তব্য কেবলমাত্র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে আঘাত করে নাই ,আমরা যারা বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসে সিলেট নগরীর বিভিন্ন ওয়াডে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করে আসছি আমরা সকলেই মর্মাহত। তাই আমি আশা করি আপনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগে বিষয়টি গণমাধ্যমের মাধ্যমে পরিষ্কার করবেন।'