ঢাকা, মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২২শে মাঘ ১৪৩১

মৌলভীবাজারের পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে জমে উঠেছে মাছের মেলা

স্বপন দেব, মৌলভীবাজার | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারী ২০২৫ ১০:৫৬:০০ পূর্বাহ্ন | দেশের খবর

 

 

হিন্দু (সনাতন) ধর্মাবলম্বীদের মকর সংক্রান্তি তথা পৌষ সংক্রান্তি উৎসব মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি)। সংক্রান্তি উৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে তৈরী হবে নানা ধরনের পিঠা-পুলি ও সুস্বাদু খাবার। তার একটি বড় অংশ হচ্ছে বাজার থেকে বড় আকারের মাছ কিনে বিরুইন ভাতের সাথে বড় মাছ ভাজা ও বিভিন্ন খাবার তৈরী হয়ে থাকে। উৎসবকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া,কমলগঞ্জ,বড়লেখা,রাজনগরসহ জেলার প্রতিটি ছোটবড় সব বাজারে মাছের মেলা বসেছে। সেইসাথে তিলুয়া কদমা, চিড়া-মুড়ি ও বিভিন্ন ফলের পসরা নিয়ে বসেছেন ক্রেতারা। 

মৌলভীবাজারের সবচেয়ে বড় মাছের মেলা বসেছে কুশিয়ারা নদীর তীরে শেরপুরে। দু’দিনব্যপি এ মেলায় জাতিধর্ম নির্বিশেষে সৌখিন ও ভোজনরশিকরা লাখ লাখ টাকার মাছ কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। কুলাউড়ার বাদশাগঞ্জ বাজার(উত্তর বাজার), ব্রাম্মণবাজার, রবিরবাজারসহ সকল বাজারে ছোটবড় সব বাজারে চিতল, রুই, কাতল, মৃগেল, পাঙ্গাস, আইড়, ব্রিগেট, বাঘ মাছ নিয়ে মাছের মেলা বসেছে।

কমলগঞ্জের মুন্সীবাজার, শমশেরনগর, ভানুগাছ বাজার, আদমপুর বাজার ও শহীদ নগর বাজারে বসেছে বিরাট মাছের মেলা। সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন জাতের বড় আকারের মাছ সাজিয়ে বসেন মাছ বিক্রেতারা। পৌষ পার্বন উপলক্ষে বড় আকর্ষণ থাকে বাজার থেকে পছন্দ মত বড় আকারের মাছ কিনে খাবার তৈরী করা।  

সোমবার দুপুরে ভানুগাছ বাজার ও শমশেরনগরে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি মাছের দোকানে সামান্য ছোট আকারের মাছ সাজিয়ে রাখা হলেও সংগ্রহে রাখা হয়েছে নানা জাতের বড় আকারের মাছ। চিতল, রুই, কাতল, মৃগেল, পাঙ্গাস, আইড়, ব্রিগেট, বাঘ মাছ, রুপ চাঁদা, ঘাস কার্পসহ নানা জাতের সামুদ্রিক মাছ। কিছু কিছু দুর্লভ মাছ যেগুলো সহজে হাট বাজারে পাওয়া যায় না এমন মাছও সাজিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হাচ্ছে । বিক্রেতারাও বেশ চড়া দাম হাকালেও শেষ পর্যন্ত সহনীয় পর্যায়ের দামে সেই মাছ বিক্রি করতে হাচ্ছে।

শমশেরনগর মাছের বাজারের আসা ক্রেতা নিবাস চন্দ, স্বপন সরকার ও রুপেন্দ্র দেব নাথ জানান, এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বাজারে নানা জাতের বড় আকারের মাছ উঠে। দাম বেশী হলেও পরে দরাদরি করে কিনে নিতে হয়। ভানুগাছ বাজারের মাছ বিক্রেতা ঝুলন, রাসেল, জাহাঙ্গীর, হাফিজ বলেন পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রায় ৮ লক্ষ টাকার বিভিন্ন ধরনের মাছ সংগ্রহ করেছি। আমাদের সংগ্রহের মধ্যে ২২ কেজি ওজনের বোয়াল যার দাম হাকেন ৪০ হাজার টাকা। ১২ কেজি ওজনের বাঘ মাছের দাম হাকেন ২১ হাজার টাকা। বিলুপ্ত প্রজাতির ১০ কেজি ওজনের নানান মাছের দাম হাকেন ২৬ হাজার।

তারা জানান, দাম বড় কথা নয়। মূলত ক্রেতাদের আকর্ষিত করে এমন বড় আকারের মাছ সরবরাহ করা হয় মাছ মেলায়। যদিও বেশ চড়া দাম বলা হলেও ক্রেতারা দরাদরি করে পড়ে সহনীয় পর্যায়ে হলে কিনে নিচ্ছেন। আর পরিবহন ব্যয় ধরে সামান্য লাভ হাতে রেখেই অবশেষে দাম কমিয়ে মাছ বিক্রি করছেন তারা।

মাছের আড়ৎদার আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, আগের চেয়ে এখন দেশীয় মাছের সরবরাহ অনেক কমে গেছে। সাধারন বাজারে এত বড় আকারের মাছ উঠে না। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাওর, বাওর, বিল ও বড় নদী থেকে ধরে আনা বড় আকারের মাছ এ বিশেষ দিনের জন্য সরবরাহ করতে হয়। মাছের মেলায় সোমবার গভীর রাত এমনকি মঙ্গলবার পর্যন্ত এ বিক্রয় চলবে বলে আড়ৎদার জানান।