ঢাকা, সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ই পৌষ ১৪৩১

মৌলভীবাজারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৮৪ হাজার পশু আর ঘাটতি ১৪ হাজারেরও বেশি

মোঃ জালাল উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : রবিবার ৯ জুন ২০২৪ ১০:৪৭:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

চলতি মাসের ১৭ জুন দেশব্যাপী ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য পর্যটননগরী মৌলভীবাজার জেলায় মোট ৮৪ হাজার ৮১২টি গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। যার বেশিরভাগই যোগান দেবেন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্থায়ী ও মৌসুমী খামারিরা।

রবিবার ০৯ জুন ২০২৪ ইং, মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আশরাফুল আলম খান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গবাদিপশু কোরবানির এমন পরিসংখ্যান বিভিন্ন উপজেলা ও জেলার খামারিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী করা হয়েছে।

বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে খামারিরা নিজেদের সেরা ও স্বাস্থ্যবান গবাদি পশু হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন। এমনিতেই এই সময়ে গবাদি পশুর খাবারের দাম অনেক চড়া। খাবারের দাম বাড়ার অজুহাতে ব্যাপারীরাও বাড়িয়েছেন গরুর দাম। এমন পরিস্থিতিতে খামারিরাও ভালো দামের প্রত্যাশায় প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত। দেশীয় পদ্ধতিতে খড়, তাজা ঘাস ও ভুষিসহ পুষ্টিকর খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করেছেন খামারিরা। তবে গরু মোটাতাজা করণে কোনো খামারিই ক্ষতিকর এন্টিবায়েটিক খাওয়াচ্ছেন না বলে নিশ্চিত করেন প্রাণিসম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলা সদরের মোস্তফাপুর, কামালপুর ও শ্রীমঙ্গল উপজেলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার খামার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদুল আজহাকে ঘিরে খামারিদের ব্যস্ততা বেড়েছে আগের থেকে।

খামারিদের বড় শঙ্কা হচ্ছে ঈদকে সামনে রেখে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে চোরাইপথে গরু প্রবেশ নিয়ে। এটি বন্ধ না হলে ভালো দাম পাওয়া নিয়ে প্রভাব পড়বে বাজারে। এ বিষয়ে খামারিরা চান প্রশাসনের শক্ত অবস্থান আর সীমান্তে কঠোর নজরদারি।

সদর উপজেলার মোস্তফাপুরে শতাধিক দেশি-বিদেশি গবাদিপশু নিয়ে গড়ে তোলা আরিয়ান ডেইরি ফার্মের মালিক ব্যবসায়ী সৈয়দ ফয়সল বলেন, গরুর খাবারের দাম এক বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে,তবুও ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা আমাদের।

তিনি বলেন, অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে গরু চোরাচালান বন্ধে সরকার চেষ্টা করছে। তারপরও যদি ভারতীয় গরু বাজারে আসে তাহলে খামারিরা নিরুৎসাহিত হবে, আমার মতো অনেকে খামার বন্ধ করে দেবে।

তরুণ এই ব্যবসায়ীর ফার্মে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকগুলো বড় বড় ষাঁড় বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আশরাফুল আলম খান বলেন, গবাদিপশুর লক্ষ্যমাত্রা ৯৮ হাজার ৫৪২টির মাঝে ৮৪ হাজার ৮১২টি গবাদিপশুর জোগান রয়েছে। অবশিষ্ট যেগুলো রয়েছে সেগুলোকে ঘাটতি বলা যাবে না। কারণ কোরবানির জন্য যে ঘাটতি রয়েছে তা ব্যক্তিগতভাবে লালন করা গবাদিপশু দ্বারা পূরণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সীমান্ত দিয়ে যাতে অবৈধভাবে গরু প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বৈঠক করা হয়েছে। ওই বৈঠকে সীমান্ত দিয়ে যাতে ভারতীয় গরু প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।

এদিকে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে মোট ২১টি স্থায়ী গবাদিপশুর হাট থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে অস্থায়ী পশুর হাটের সর্বশেষ পরিসংখ্যানের তথ্য জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেও জানা সম্ভব হয়নি।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় মোট ৮৪ হাজার ৮১২টি গবাদিপশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। খামার রয়েছে ৫ হাজার ৩৬৯টি। কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৮ হাজার ৫৪২টি গবাদিপশু। আর ঘাটতি রয়েছে ১৪ হাজার ৭৩০টি।