ঢাকা, সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ঠা অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মৌলভীবাজারে পিতা-পুত্রের হাত কর্তন করল প্রতিপক্ষ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : রবিবার ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ১০:২২:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন



মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলে পুর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় ৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের ডান হাত কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলায় গুরুত্বর অবস্থায় তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বালু ব্যবসায়ী জলিল মাহমুদকে প্রধান আসামী করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৭-৮ জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার ২৯ এপ্রিল উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের এ ঘটনা ঘটে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন আসামীগণ পুর্বপরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ৫টি মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে এসে হামলা চালায়। এসময় প্রধান আসামী জলিল মাহমুদের নির্দেশে আসামীরা আলিশারকুল গ্রামের মৃত ওয়াহাব উল্ল্যার ছেলে আলকাস মিয়া (৬০) ও তার ছেলে বুলবুল আহমেদকে (৩০) দোকান খেকে টেনে রাস্তায় নিয়ে চা পাতি দিয়ে আঘাত করে। এতে আলকাস মিয়ার ডান হাত ও পেটের ডান পাশে মারাত্বক কাটা জখম হয় এবং বুলবুল আহমেদের ডান হাত কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে।

বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা সাহেদ মিয়া নামে আরেকজনকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে আহত সাহেদ মিয়ার বা হতে ১৭টি সেলাই দেয়া হয়। এছাড়া কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুত্বর আহত আলকাস মিয়া ও তার ছেলে বুলবুল আহমদকে প্রথমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পরে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতাল পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আসামীদের সাথে পূর্ব বিবাদের জের এবং অবৈধ বালু ব্যবসার প্রতিবাদ করায় এই হামলার ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আহত আলকাছ মিয়ার অপর ছেলে ফেরদৌস আহমেদ বাদী হয়ে আলিশারকুল গ্রামের মৃত আমজদ উল্ল্যার ছেলে জলিল মাহমুদ (৫০) কে প্রধান আসামী করে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অপর আসামীরা হলেন, জলিল মাহমুদের ভাই জালাল মিয়া (৫২), একই গ্রামের মৃত জয়নাল মিয়ার পুত্র জাহিদুল ইসলাম ওরফে রনী (২৫) ও জাহাঙ্গির মিয়া (৩২), মৃত ছোবহান মিয়ার পুত্র  রিপন মিয়া (৩৫) ও আলআমিন (৩০),  মৃত ফিরোজ মিয়ার পুত্র আহাদ এবং মৃত রহমান মিয়ার পুত্র রাসেল মিয়া (৪০)।  

জানা যায়, জলিল মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে সরকার নিষিদ্ধ সিলিকন বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে আসছিল। গ্রামের কৃষি জমি গর্ত করে বালু উত্তোলন করে এলাকার পরিবেশ, সরকারী রাস্তাঘাট ও গ্রামীন অবকাঠামো মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ করছেন। এনিয়ে এলাকার লোকজনদের সাথে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় মানুষ প্রতিবাদ করে কুলিয়ে উঠতে পারতো না।

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় বালু ব্যবসা নিয়ে ভুনবীর চৌমুহনা এলাকায় আলিশারকুল গ্রামের আলকাছ মিয়ার ছেলে বুলবুল আহমেদ ও একই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য জয়নাল মিয়ার ছেলে জাহিদুল ইসলাম রনির কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জাহিদুল ইসলাম রনি ধারালো দা দিয়ে বুলবুলের ডান হাতে কোপ দিলে তার হাতের কনুই থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।