ঢাকা, শনিবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ই পৌষ ১৪৩১

লক্ষ্মীপুরের রাস্তার দু'পাশের জমির মালিকদের ন্যায্য দামে বঞ্চিতের অভিযোগ

মু.ওয়াহিদুর রহমান মুরাদ,লক্ষ্মীপুর | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২০ জুন ২০২৩ ০৪:২৪:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
লক্ষ্মীপুরে শহর সংযোগ সড়ক প্রশস্তকরণে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য মার্কেট ও বাণিজ্যিক এলাকাকে নাল জমি ও বাগান দেখিয়ে নোটিস নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এতে জমির ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কেটের দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
 
জমির মালিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন বাণিজ্যিক জায়গা হিসেবে খাজনা পরিশোধ করা হারিস মার্কেটের জায়গাগুলোকে নাল দেখানো মূলত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করার পাঁয়তারা। এর ফলে হুমকিতে পড়বে খোদ প্রকল্পটি। তবে অধিগ্রহণ সংশ্লিষ্টদের দাবি, এসএ খতিয়ানে জমি যে শ্রেণিতে রয়েছে সে অনুযায়ী নোটিস দেওয়া হয়েছে।
 
জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ সড়ক ও লক্ষীপুর চরআলেকজান্ডার- সোনাপুর-মাইজদী সড়ক প্রশস্তকরণ উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। এর মধ্যে লক্ষীপুর- চরআলেকজান্ডার সোনাপুর-মাইজদী প্রশস্তকরণ কাজ চলমান থাকালেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় এখনও শুরু হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ। সবচেয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র উত্তর তেমুহনীর হারিছ মার্কেট এলাকার জমি অধিগ্রহণ নিয়ে।
 
হারিছ মার্কেটের দোকান মালিকরা জানান, ৭ জুন জেলা প্রশাসন কর্তৃক সর্বশেষ নোটিস ইস্যু করা হয়েছে। কিন্তু এ নোটিস দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীদের দেওয়া হয়েছে ১২ জুন। নোটিসে আগামী ২৪ জুন নিজ দায়িত্বে দোকানঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ইসমত জাহান তুহিন নোটিসগুলোতে সই করেন।
 
নোটিসে ১৯৬০ সালের এস.এস খতিয়ান অনুযায়ী নাল ও বাগান শ্রেণি অনুযায়ী জায়গার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যা শতাংশপ্রতি সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা। অথচ মৌজা অনুযায়ী বর্তমানে প্রতি শতক জমির দাম রাজি নয়।' ৫০ লাখ টাকা। তারা বলেন, প্রকল্প যখন পাস হয় তখন আরএস ছিল না। বর্তমানে আরএস অনুযায়ী অধিগ্রহণ করলেই ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে। বাজারদরের চেয়ে ৬-৭ গুণ কম দামে আমাদের পক্ষে জায়গা ছাড়া সম্ভব হবে না।
 
আজিজুল করিম, রেজাউল করিম, বজলুল করিমকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনটি নোটিস দেওয়া হয়। তারা বাস্থানগর এলাকার মৃত হারিছ মিয়ার ছেলে ও জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র উত্তর তেমুহনী হারিছ মার্কেটের ওয়ারিশ। নোটিসে প্রায় ৭ শতাংশ জমির মূল্য ও স্থাপনার ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ৭০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
শাহাব উদ্দিন জানান, প্রায় ৩০ বছর ধরে বাণিজ্যিক (চান্দিনা ভিটা) এলাকা হিসেবে হারিছ মার্কেটের খাজনা পরিশোধ করা হয়। এখন নাল জমি ও বাগান দেখিয়ে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করার পোঁয়তারা করা হচ্ছে।
 
জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকার হারিছ মার্কেটের ওয়ারিশ ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, 'আমাদের জমি চান্দিনা ভিটা মৌজার অন্তর্ভুক্ত। সরকার জমির ন্যায্যমূল্য দিয়েই বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন অদৃশ্য কারণে আমাদেরকে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা করছেন। রাস্তা প্রশস্তকরণ জরুরি। কিন্তু মূল না দিলে আমরা দোকানঘর ভাঙতে
 
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
 
 ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্ত ইসমত জাহান তুহিন বলেন, এসএ খতিয়ান অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। সেই হিসেবেই জমির মুল্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এসএ খতিয়ান হিসেবে জমিগুলো নাল ও বাগান হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে।