
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সমস্যায় পড়তে হয়। এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিকল্প শহীদ মিনার নির্মাণ করে নিতে হয়।
প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানায় অসংখ্যা মানুষ। বিশেষ করে এই দিন আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অনেক কর্মসূচি গ্রহণ ও পালন করতে হয়।
মাতৃভাষা প্রত্যেকটি জাতির জাতিসত্তা বিকাশের অনবাদ্য মাধ্যম। মাতৃভাষা ব্যতীত আত্নপরিচয় ও আত্নমর্যাদা সমৃদ্ধ হয়না। তাই পৃথিবীর প্রত্যেকটি জাতিগোষ্ঠীই মাতৃভাষাকে মর্যাদা দিয়ে থাকেন। এই মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষার জন্য বাংলা ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে যা নির্মাণ করা হয়েছে সেই স্থাপনা গুলিই হল শহীদ মিনার। নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই শহীদ মিনারের তাৎপর্য তুলে ধরতে তথা বাংলা ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক ঘটনা স্বরণীয় করে রাখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞরা মতপ্রকাশ করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলায় স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৯১টি। এর মধ্যে শহীদ মিনার নাই ৫২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। স্কুল পর্যায়ে শহীদ মিনার নাই ২২টি, মাদ্রাসা পর্যায়ে নাই ২৮টি ও কলেজ পর্যায়ে নাই ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
শহীদ মিনার নাই এমন একটি প্রতিষ্ঠান ধূমঘাট নিম্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন মহান ২১ ফেব্রুয়ারী পালিত হয় বিকল্প শহীদ মিনার নির্মাণ করে। অর্থের অভাবে বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার এখনও পর্যন্ত নির্মাণ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।
শ্যামনগর উপজেলা সদরের মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ভাষা শহীদদের স্বরণে উপজেলায় প্রথম ১৯৬৯ সালে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় বর্তমান শ্যামনগর পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয় চত্তর। যা পূর্বে শ্যামনগর ইউনিয়ন পরিষদ ছিল। তিনি বলেন মাখন চ্যাটার্জীর সহায়তায় ও বাইরের একজন ঠিকাদারের অর্থ সহায়তায় ইউপি চত্তরে মাষ্টার নজরুল ইসলাম, লিয়াকত সরদার, অচিন্ত্যদে, মির আজিজ সহ অন্যান্যরা শহীদ মিনার নির্মাণ করেছিলেন। ভাষা শহীদদের স্বরণে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা খুব প্রয়োজন বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: রণী খাতুন এ বিষয়ে বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের স্বরণে শহীদ মিনার থাকাটা খুবই প্রয়োজন। যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই সেকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণে যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন সরকারি সহায়তা করার । তবে তিনি স্থানীয়ভাবে ফান্ড সংগ্রহ বা স্কুলের ফান্ডে শহীদ মিনার নির্মাণ করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রতি আহব্বান জানান।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ