সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা, রহস্য-ঔপন্যাসিক কাজী আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন। ১৯ জানুয়ারি বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে তিনি বারডেমে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তার মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছেন পূত্রবধূ মাসুমা মায়মুর।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, ‘গত অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়ে। মাঝে পাঁচ বার হসপিটালাইজড ছিলেন। চিকিৎসার সুযোগ খুব একটা পাওয়া যায়নি। একটা ব্রেইন স্ট্রোক ও হার্টঅ্যাটাক হয়ে সব শেষ হয়ে গেল। ১০ জানুয়ারি থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। আজ চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে।’
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রহস্য-রোমাঞ্চ গল্পকে জনপ্রিয় করে তুলে ছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন। তাঁর সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে তৈরি হয় এ সাহিত্যধারার পাঠকশ্রেণি। তিনি ‘বিদ্যুৎ রায়’ এবং ‘শামসুদ্দিন নওয়াব’ ছদ্মনামে লিখেছেন অসংখ্য গল্প।
পাঠকদের কাছে তিনি পরিচিত প্রিয় কাজীদা নামে। প্রখ্যাত গণিতবিদ ও সাহিত্যিক বাবা কাজী মোতাহের হোসেন ও মা সাজেদা খাতুনের ঘরে ১৯৩৬ সালের ১৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন কাজী শামসুদ্দিন নওয়াব।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের পূর্ব সীমানায় উত্তর ও দক্ষিণ কোণে যে দুটি দোতালা গেস্ট হাউজ আজও দেখা যায়, সেখানেই উত্তরের দালানটিতে আনোয়ার হোসেনের ছেলেবেলা কেটেছে। ১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বাড়ি বদল করে তারা দক্ষিণ দিকের গেস্ট হাউজে চলে যান।
পরিবারের সংগীতচর্চার ধারাবাহিকতায় প্রথমে সংগীতশিল্পী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও ১৯৬৩ সালে বাবার দেওয়া টাকায় সেগুনবাগিচায় প্রেসের যাত্রা শুরু করেন। পরে সেই প্রেস থেকেই নিজের সম্পাদনায় পেপারব্যাকে সৃষ্টি করেছেন চিরতরুণ চরিত্রগুলো। ‘কুয়াশা’ ও ‘মাসুদ রানা’ সিরিজ দিয়ে আলোচনায় আসেন কাজী আনোয়ার হোসেন।